ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
লক্ষ্যমাত্রাটা মাত্র ১৪১। জয়টা সহজই মনে হয়েছিল বাংলাদেশি ক্রিকেট প্রেমিদের। কিন্তু তাদেরকে ভুল প্রমাণ করেছেন মুশফিকুর রহিম-সাকিবব আল হাসান। রোববার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের কাছে টাইগাররা হেরেছে ৬ রানে।
১৪১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩৪ রানে থামে বাংলাদেশ। যে কারণে ৬ রানে হার মানতে হয়েছে টিম টাইগার্সের।
১৪১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে রোববার শুরুতেই সৌম্য সরকার ও লিটন দাসকে হারিয়ে ফেলে। দুজনই আউট হন উড়িয়ে মারতে গিয়ে দু’জনেই করেন ৫ রান করে। পরে এ ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করে মুশফিক-সাকিব। একটা সময় আশাও জাগিয়েছিলেন তারা। সাকিব অবশ্য সুবিধা করতে পারেননি। ২৮ বলে খেলেন ২০ রানের ইনিংস। মুশফিক বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে গিয়ে আউট হন ৩৮ রান করে। ৩৬ বলে ইনিংসটি সাজান ১টি চার ও ২টি ছয়ের মারে। ৭৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে আবার বিপদে পড়ে টাইগাররা।
এরপর দলের হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন। শেষ ৬ ওভারে জয়ের জন্য তাদের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৬১। সে চাপ সামলাতে গিয়েই আফিফ আউট হন ১২ বলে ১৮ রান করে। ১৫ বলে জয়ের জন্য বাকি ৩৫ রান। নতুন ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান যখন বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান, তখন কার্যত শেষ হয়েছে বাংলাদেশ দলের জয়ের স্বপ্ন। মাহমুদউল্লাহ শেষ চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি তাতে। অধিনায়ক ২২ বলে ২৩ রান করে বিদায় নিলে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রানে থামে বাংলাদেশ দলের ইনিংস। যে কারণে ৬ রানের হার মানতে বাধ্য হয় টাইগাররা। এরফলে বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা পাওয়াটা বাংলাদেশের কঠিনেই হয়ে গেল।
এরআগে টস জিতে রোববার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নেন বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশি বোলাররা অধিনায়কের সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করেছেন শুরু থেকেই। প্রথম ওভারে তাসকিন দেন ৪ রান। মোস্তাফিজুর রহমান পরের ওভারে আরও মিতব্যয়ী, খরচ করেন মাত্র ১ রান।
মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন চতুর্থ ওভারে আক্রমণে েএসে চতুর্থ বলেই সাফল্য পান। টাইগার পেসার পরিষ্কার বোল্ড করেছেন কাইল কোয়েতজারকে (৭ বলে ০)। ক্রস খেলতে গিয়েই আউট হয়েছেন ম্যাথিউ ক্রস। ইনিংসের অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে শেখ মাহেদি হাসান এলবিডব্লিউ করেছেন তাকে। এর তিন বল পর তিনি বোল্ড করেছেন ভয়ংকর জর্জ মুনসেকেও (২৩ বলে ২৯)।
ক্যাচ মিসে যেমন ম্যাচ মিস হয়, তেমন একটি ক্যাচ ম্যাচ ঘুরিয়েও দিতে পারে। আফিফ হোসেন বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই নজর কাড়লেন দারুণ এক ক্যাচ নিয়ে। সাকিব আল হাসানকে স্কটিশ ব্যাটসম্যান স্কট বেরিংটন (৫ বলে ২) যেভাবে হাঁকিয়েছিলেন, তাতে বলটি ছক্কাই হতে পারতো। কিন্তু দারুণভাবে বাউন্ডারিতে সেটে ধরে ফেলেন আফিফ। পরে ভারসাম্য রাখতে না পেরে বল ওপরে তুলে চলে যান বাউন্ডারির বাইরে। সেখান থেকে এসে আবার দারুণভাবে লুফে নেন ক্যাচটি।
ইনিংসের অষ্টম ওভারে জোড়া আঘাত হেনেছিলেন মেহেদি হাসান। সাকিব একাদশতম ওভারে এসে জোড়া আঘাত হানেন। বেরিংটনের পর তাকে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে লিটন দাসের ক্যাচ হন মাইকেল লিস্ক (০)। পরের ওভারে আবার মেহেদি। এরপর মার্ক ওয়াট আর ক্রিস গিভসের প্রতিরোধ। টি-টোয়েন্টি মেজাজেই ব্যাটিং করেছেন দুজন। ৩৪ বলের জুটিতে যোগ করেন ৫১ রান। শেষ পর্যন্ত ১৮তম ওভারে এসে সেই জুটি ভেঙেছেন তাসকিন। ১৭ বলে ২২ করা ওয়াট বাউন্ডারিতে হয়েছেন সৌম্য সরকারের ক্যাচ।
তবে গ্রিভস ঠিকই মারকুটে ব্যাটিং করেছেন। ২৭ বলেই তিনি করেন ৪৫ রান। শেষ ওভারে এসে এই ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান, বাউন্ডারিতে সাকিব নিয়েছেন ক্যাচ। পরের বলে আরও এক উইকেট কাটার মাস্টারের, বোল্ড করেছেন জশ ড্যাভেকে (৮)। তবে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেও তা হয়নি।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে ১৯ রানে ৩টি উইকেট নেন এই অফস্পিনার। ১৭ রানে সাকিবের শিকার ২ উইকেট। মোস্তাফিজ ২ উইকেট নিয়েছেন ৩২ রান খরচায়। একটি করে উইকেট শিকার তাসকিন আর সাইফউদ্দিনের।
Discussion about this post