বাংলাদেশ দলের অনুশীলন মাঠে সকালের রোদ তখন চড়া। ঘামে ভিজে গেছে খেলোয়াড়দের জার্সি, দম নিতে নিতে তারা দৌড়াচ্ছেন শেষ ল্যাপ। পাশেই দাঁড়িয়ে নাথান কেলি, চোখে গর্ব আর চিন্তার মিশেল। বাংলাদেশের এই অস্ট্রেলিয়ান স্ট্রেংথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ জানেন-মনোভাব ও পরিশ্রমে বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা পিছু হটে না, কিন্তু আন্তর্জাতিক মানের ফিটনেসে পৌঁছাতে এখনও বহু পথ বাকি।
কেলি বলছিলেন, পার্থক্যটা শুধু খেলোয়াড়দের নয়, গোটা কাঠামোর মধ্যেই। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে যেখানে ২০–৩০ জন উচ্চমানের স্ট্রেংথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ থাকে, সেখানে বাংলাদেশে সংখ্যাটা মাত্র তিন।
বাংলাদেশে নির্দিষ্ট অফ-সিজন নেই। বছরের নানা সময়ে ম্যাচ ছড়িয়ে থাকায় দীর্ঘমেয়াদি ফিটনেস ক্যাম্পের সুযোগ কম। পশ্চিমা দেশগুলোতে প্রাক-মৌসুমেই চলে নিবিড় শারীরিক প্রস্তুতি, যা বাংলাদেশে সম্ভব হয় কেবল সূচির ছোট ফাঁকে।
পাকিস্তান সিরিজের পর প্রায় দুই সপ্তাহের বিরতিতে ২৪ জুলাই শুরু হয় জাতীয় দলের ফিটনেস ক্যাম্প। টাইম ট্রায়াল, জিমে শক্তি বাড়ানো, মাঠে দৌড়-সবই চলছে খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত শক্তি–দুর্বলতা চিহ্নিত করতে। কাইলি স্পষ্ট করেছেন, এই পরীক্ষার লক্ষ্য পাস–ফেল নয়, বরং প্রত্যেকের জন্য আলাদা ট্রেনিং পরিকল্পনা তৈরি করা।
কেলি বলেন, ‘ছেলেরা কঠোর পরিশ্রম করছে। আজকের ড্রিলগুলোও সহজ ছিল না। আপনারা যদি মনে করেন এগুলো কঠিন নয়, তবে আমাদের সঙ্গে একদিন করে দেখুন।’ তার চোখে, মানসিকতা ও আত্মনিবেদনই এই দলের বড় শক্তি।
ফিটনেস উন্নয়নের পথ শুধু জাতীয় দলে সীমাবদ্ধ নয়। ঘরোয়া ক্রিকেটেও প্রয়োজন দক্ষ ট্রেনারের সংখ্যা বাড়ানো এবং সারা বছর ফিটনেস ধরে রাখার একটি কার্যকর সিস্টেম গড়ে তোলা। কেলি জানালেন, তিনি কাজ করছেন স্থানীয় ট্রেনারদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে, যাতে গোটা ক্রিকেট কাঠামোতে উন্নতি আসে।
Discussion about this post