অনেকদিন পর ওয়ানডে সিরিজ জিতল পাকিস্তান। প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ বলেই কি সম্ভব হয়েছে এটা! বুধবার শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪ উইকেটে হারায় পাকিস্তান। সেই সঙ্গে পাঁচ ম্যাচের সিরিজটা ৩-১-এ জিতে নিয়েছে তারা। ব্যাট হাতে স্বপ্নের একটি সিরিজ পার করলেন অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক। এ ম্যাচেও জয়ের নায়ক তিনি। ৬৩ রান করে হয়েছেন ম্যাচসেরা। পাঁচ ম্যাচের চারটিতেই হাফসেঞ্চুরি। তাই সিরিজসেরার পুরস্কারটাও গেছে তার ঝুলিতে।
প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২৪২ রান করেছিল স্বাগতিকরা। মাত্র এক বল বাকি থাকতে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। শেষ ওভার কিছুটা নাটকীয়তার জন্ম দিয়েছিল। ৫০তম ওভারে মাত্র ১ রান দরকার ছিল পাকিস্তানের। প্রথম বলে রান নিতে পারলেন না অধিনায়ক মিসবাহ। ঠিক পরের বলেই ফিরে যেতে হল তাকে। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে রান পেলেন না নতুন ব্যাটসম্যান সাঈদ আজমল। মানে শেষ দুই বলে ১ রান করতে হবে পাকিস্তানকে। এ অবস্থায় পঞ্চম বলে জয়সূচক রান নিলেন আজমল। কিন্তু ভাগ্য খারাপ থাকলে রান আউট হয়ে যেতে পারতেন আজমল। কিন্তু কায়রন পোলার্ডের থ্রোটা অল্পের জন্য উইকেটে লাগেনি। শনি ও রোববার সেন্ট ভিনসেন্টে হবে দুটি টি-টুয়েন্টি ম্যাচ।
প্রথমে ব্যাট করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের এদিনও শুরুটা ভালো ছিল না। ৪৪ রানে নেই ২ উইকেট। যদিও ওপেনার চার্লস ভালোই খেলে যাচ্ছিলেন। ভালো খেলার মধ্যেই ৪৩ রানে মোহাম্মদ ইরফানের বলে ফিরতে হয়েছে তাকে। আগের ম্যাচগুলোতে রানের মধ্যেই ছিলেন স্যামুয়েলস। এ ম্যাচেও হাল ধরলেন। কিন্তু এদিন ব্যর্থ হল ক্রিস গেইলের ব্যাট। মাত্র ২১ রান করে ফিরে গেছেন। আর ৪৫ রারে আউন হন স্যামুয়েলস। তবে শেষদিকে অধিনায়ক ডোয়েইন ব্রাভো এবং ড্যারেন স্যামির দারুণ ব্যাটিং ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান নিয়ে যায় ৭ উইকেটে ২৪২-এ। মাত্র ২৭ বলে ৪৮ রান করেন ব্রাভো। আর ১৮ বলে ২৯ করে অপরাজিত থাকেন সাবেক অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি। জুনায়েদ খান ৩ এবং ইরফান ও সাঈদ আজমল ২টি করে উইকেট নেন।
শুরুতে মনে হয়েছিল এই রান পাকিস্তানের কাছে কোনো ব্যাপারই হবে না। দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন দুই ওপেনার নাসির জামশেদ ও আহমেদ শেহজাদ। ১০.৫ ওভারে এ জুটি রান নিয়ে যান ৫১-তে। এরপর ২৩ রানে দুর্ভাগ্যজনক রান আউটের শিকার হন জামশেদ। মোহাম্মদ হাফিজ ফিরে যান ১১ রান করে। কিন্তু পাকিস্তানকে এগিয়ে নেন শেহজাদ এবং মিসবাহ। আগের চার ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই হাফসেঞ্চুরি পাকিস্তান অধিনায়কের। এদিনও ব্যাট হাতে দায়িত্বটা ভালোই পালন করলেন তিনি। ৬৪ রানে শেহজাদ আউট হয়ে যাওয়ার পর প্রথমে হ্যারিস সোহেল এবং পরে উমর আকমল ও আফ্রিদিকে নিয়ে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন মিসবাহ। মনে হয়েছিল এদিন অপরাজিত থেকেই দলকে জেতাবেন। কিন্তু দলকে জয় থেকে ১ রান দূরে রেখে ৬৩ রানে ফিরে যেতে হয়েছে তাকে। এরপর শেষ ওভারের ছোটখাটো নাটকের পর শেষ হাসি হাসে পাকিস্তানই। ছয় বলে ১৩ রানে অপরাজিত থাকে শহিদ আফ্রিদি।
এ ম্যাচও অবশ্য ডার্ক-ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতির দিকে যাচ্ছিল। ৪৭.৪ ওভারে পাকিস্তানের রান তখন ২২৬। বৃষ্টির জন্য তখন কিছুক্ষণের জন্য খেলা বন্ধ থাকে। তবে ২০ মিনিটের মধ্যেই মাঠ খেলার উপযুক্ত হয়ে গেলে বৃষ্টি আইনে গড়াতে পারিনি ম্যাচটি।
Discussion about this post