একটা জয়, একটা ইতিহাস। পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার এক সুবর্ণ সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু ক্রিকেট কখনোই সরল সমীকরণ মেনে চলে না। মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সেই সম্ভাবনার কাছে গিয়েও ব্যর্থ হলো লিটন দাসের দল। সিরিজ জিতে নিলেও শেষ ম্যাচে ৭৪ রানে হেরে গিয়েছে টাইগাররা।
সিরিজের আগেই দুটি ম্যাচ জিতে ফেলে ছিল স্বাগতিকরা। স্বভাবতই শেষ ম্যাচ ছিল আত্মবিশ্বাসের পরীক্ষার মঞ্চ। পাকিস্তান ছিল চাপমুক্ত, আর বাংলাদেশ ছুটছিল ইতিহাসের পেছনে। তবে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং ব্যর্থতায় সব কিছু গড়বড় হয়ে গেল।
টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিল তাদের দুই ওপেনার সাইম আইয়ুব ও সাহিবজাদা ফারহান। বিশেষ করে ফারহান ছিলেন মারমুখি। ৬৩ রানের এক ঝলমলে ইনিংস খেলেন তিনি। ওপেনিং জুটিতে আসে ৮২ রান। এরপর বাংলাদেশের বোলাররা কিছুটা নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনলেও ইনিংসের শেষ দিকে মোহাম্মদ নওয়াজ ও সালমান আলী আঘার ব্যাটে স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ করে পাকিস্তান। নির্ধারিত ২০ ওভারে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৭৮ রান।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ছন্দ হারায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় বলেই তানজিদ হাসান তামিম ফিরে যান শূন্য রানে। অধিনায়ক লিটন দাসও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি, ফেরেন মাত্র ৮ রান করে। এরপর একে একে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। মেহেদী মিরাজ, জাকের আলী, শেখ মেহেদী—সবাই ব্যর্থ। পাওয়ারপ্লেতে পড়ে যায় ৫টি উইকেট, স্কোরবোর্ডে রান মাত্র ২৯।
ব্যাটিং বিপর্যয়ের এই ধারা শেষ পর্যন্ত চলতেই থাকে। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, যিনি ৩৪ বলে ৩৫ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন। বাকি কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি নিয়মিতভাবে। শেষ পর্যন্ত ১৯.৫ ওভারে ১০৪ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।
এই জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল পাকিস্তান। যদিও সিরিজ তাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে আগেই। বাংলাদেশের জন্য এটি একপ্রকার মিশ্র অনুভূতির ম্যাচ। সিরিজ জয় আনন্দের, তবে ঐতিহাসিক এক কীর্তি গড়তে না পারা কিছুটা হতাশারও বটে।
শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে পাঁচটি পরিবর্তন এনেছিল। বিশ্রামে ছিলেন কয়েকজন নিয়মিত ক্রিকেটার, সুযোগ পেয়েছিলেন নতুনরা। তবে আজকের দিনে কোনো পরিবর্তনই ম্যাচের রঙ বদলাতে পারেনি। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ শুরু থেকেই পাকিস্তানের হাতেই ছিল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৭৮/৭ (ফারহান ৬৩, হাসান ৩৩, নেওয়াজ ২৭, আইয়ুব ২১; তাসকিন ৩/৩৮, নাসুম ২/২২, সাইফউদ্দিন ১/২৮, শরীফুল ১/৩৯)।
বাংলাদেশ: ১৬.৪ ওভারে ১০৪/১০ (সাইফউদ্দিন ৩৫*, মিরাজ ১০, নাঈম ১০; মির্জা ৩/২০, নেওয়াজ ২/৪, ফাহিম ২/১৩)।
ফল: পাকিস্তান ৭৪ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: সাহিবজাদা ফারহান।
সিরিজসেরা: জাকের আলি অনিক।
সিরিজ: বাংলাদেশ ২–১ ব্যবধানে জয়ী।
Discussion about this post