খেলা শুরুর আগে মাঠে আম্পায়ার মিজানুর রহমানকে দেখে অবাক লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের কর্মকর্তারা। আগের দিন তারা এ আম্পায়ারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিসিবিতে চিঠি দিয়েছেন। আম্পায়ার মিজানুর রহমান যাতে অন্তত লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের ম্যাচ পরিচালনা না করেন-সেই অনুরোধও করা হয়েছিল চিঠিতে। কিন্তু সেই অনুরোধ তাদের রক্ষা করা হয়নি। শুক্রবার রাতে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের যুগ্ম সম্পাদক তরিকুল ইসলাম টিটু জানান-‘আমরা যে আম্পায়ারকে নিরপেক্ষ নয় বলে অভিযোগ করেছি, সেই আম্পায়ারকেই বিসিবি এ ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব দিল! বাধ্য হয়ে আমরা ম্যাচ খেলেছি। কিন্তু আন্ডার প্রোটেস্টে খেলেছি।’
ফতুল্লা স্টেডিয়ামে শুক্রবার লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ এবং আবাহনীর ম্যাচের সময় গ্যালারিতে আবাহনীর দর্শকরাও জোরালো উপস্থিত থাকলেও মাঠের ক্রিকেটে দলটির পারফরম্যান্স ছিল বর্ণহীন, ফ্যাকাসে! আর অবাক করার বিষয় ছিল-দু’দলের ড্রেসিংরুমের সামনেই আবাহনীর সমর্থকদের উপস্থিতি! ভিআইপি গ্যালারির দুই পাশে দু’দলের ড্রেসিংরুম। আবাহনীর ড্রেসিংরুমের সামনে সমর্থকরা তো ছিল-লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের ড্রেসিংরুমের সামনের অংশের গ্যালারিও আবাহনীর সমর্থকদের দখলে!
অন্য সময়ে এটা সাধারণত দেখা যায় না। প্রতিপক্ষের ড্রেসিংরুমের সামনে আবাহনীর সমর্থকদের বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি, স্লোগান, হোজ্জা, ভুয়া-ভুয়া বলে চিৎকার লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের খেলোয়াড়দের অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। এ প্রসঙ্গে ম্যাচ চলাকালে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের যুগ্ম সম্পাদক টিটু এবং ম্যানেজার রুবেল দু’জনই ভীষণ উষ্মা প্রকাশ করেন। তাদের অভিযোগ-‘আমাদের সমর্থকদের এখান থেকে জোর করে বের করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের ড্রেসিংরুমের সামনে খেলোয়াড়দের বিরক্ত করতেই আবাহনীর সমর্থকরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এখানে জড়ো হয়।’
লিজেন্ডস কর্তাদের অভিযোগ-যে কোনো মূল্যে তাদের হারাতে যেন মরিয়া বোর্ডের একটি শক্তিশালী অংশ। বিভিন্নমুখী প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছি আমরা। টিটু জানান-‘আমাদের ক্লাবের শীর্ষ কর্মকর্তারা এ ম্যাচ দেখতে এসেছিলেন। আমরা বিসিবির কাছে ভিআইপি বক্সের জন্য বলেছিলাম। কিন্তু আমাদের কোনো বক্স দেওয়া হয়নি। অথচ আবাহনীর কর্তারা সেই সুবিধা ঠিকই নেন।’
খেলা শুরুর আগে মারমুখী সমর্থকদের দিয়ে বিভিন্নমুখী তোড়জোড় করে আবাহনী মাঠে আনস্পোর্টিং আবহ তৈরির অপচেষ্টা চালায় বলেও লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন। পুরো ম্যাচ ভিডিও করার জন্য সকালে ক্যামেরা নিয়ে গেলেও বিসিবি উচ্চপদস্থদের নির্দেশে সেই ভিডিও ক্যামেরা জব্দ করা হয়। জানিয়ে দেওয়া হয়-কোনো ম্যাচ ভিডিও করা যাবে না। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রূপগঞ্জের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন-‘আমরা আমাদের খেলোয়াড়দের খেলা ভিডিও করে পরে তাদের সেই ভুলগুলো বিশ্লেষণের উদ্যোগ নিয়েছিলাম কিন্তু বিসিবি তাতেও বাদ সাধল।’ লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাদল এ অভিযোগ করে বলেন-‘বিসিবি কি তাহলে ভিডিও ক্যামেরাকে ভয় পায়?’
বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ও আবাহনীর কর্মকর্তা জালাল ইউনুস কাল রাতে এ প্রসঙ্গে সকালের খবরকে জানান-‘কোনো দল মাঠে খেলার ভিডিও করতে চাইলে আগে সিসিডিএমের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। নইলে তো যে কেউ মাঠে ভিডিও ক্যামেরা নিয়ে ঢুকে যাবে।’ পাল্টা যুক্তি হিসেবে লুৎফর রহমান বাদল জানিয়ে দিলেন-‘আমরা আমাদের ম্যাচ ভিডিও করার অনুমতি চেয়ে সিসিডিএমের কাছে সেই প্রথম খেলার আগেই চিঠি দিয়েছি। সিসিডিএম কি তাহলে সেই চিঠি খুলে দেখেনি?’
#সৌজন্যে: সকালের খবর (২২ নভেম্বর’ ২০১৪)
Discussion about this post