ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
কিছুটা বিরতি দিয়ে শুক্রবারই ছন্দে ফিরলেন শাহরিয়ার নাফীস। তাকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন আকবার-উর-রহমান। এদিকে ফর্মের তুঙ্গে থাকা নাঈম ইসলাম আবারও দলের হাল ধরেন। শেষ দিকে দ্রুত রান তোলে। শেষ পর্যন্ত তাদের নৈপুণ্যে লড়াইয়ের পুঁজি পেয়ে যায় সাবেক ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) চ্যাম্পিয়নরা। এরপর বল হাতে শুরু থেকেই আগুন ঝরান মোহাম্মদ শহীদ। এক পর্যায়ে তার পেসেই প্রাইম দোলেশ্বরকে ৭২ রানে উড়িয়ে দিয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। তাতে আবারও চলতি লিগে দলটির জয়রথ দেখল ক্রিকেট প্রেমিরা।
শুক্রবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সপ্তম রাউন্ডের ম্যাচে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শাহরিয়ার নাফীস (৬৮), আকবর-উর-রহমান (৬৭) ও নাঈম ইসলামের (৪৩*) দৃঢ়তায় নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৬৫ রান করে লিজেন্ডসরা। পরে শহীদের (৪/২৩) দুর্দান্ত বোলিংয়েই প্রতিপক্ষকে ৪৬ ওভারে মাত্র ১৯৩ রানে গুটিয়ে দেয় নাঈম ইসলামের দল। এর ফলে চলতি ডিপিএলে টানা চতুর্থ জয়ের দেখা পেল লিজেন্ডসরা। আর তাতে রান রেটের সামন্য ব্যবধানে পেছনে থেকে টেবিলের দুইয়ে জায়গা করে নিয়েছে দলটি।
ফর্মের তুঙ্গে থাকা মোহাম্মদ নাঈমকে শুক্রবার শুরুতেই হারিয়ে বিপদে পড়েছিল রূপগঞ্জ। তবে দ্বিতীয় উইকেটে নেমে মারুফের সঙ্গে ৩৩ রানের জুটিতে ধীরে ধীরে সাবেক ডিপিএল চ্যাম্পিয়নদের এগিয়ে নেন শাহরিয়ার নাফীস। ঠিক সে সময় আরাফাত সানির স্পিনে প্রলুব্ধ হয়ে বড় শর্ট খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হয়ে ফিরেন মারুফ। তাতে তার হ্যাটট্রিক সেঞ্চুরি পাওয়ার স্বপ্নটাও শেষ হয়ে যায়।
মারুফ ফিরলেও শাহরিয়ারকে বেশ সঙ্গ দেন মুমিনুল। কিন্তু তিনিও ছিলেন অত্যান্ত স্থির। তাই রানের গতি ছিল মন্থর। শেষ পর্যন্ত দলীয় ৮৩ রানে মুমিনুল ফিরলে আকবারকে নিয়ে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন নাফীস। চতুর্থ উইকেটে তারা গড়েন ১০১ রানের জুটি। পরে শাহরিয়ার ফিরে গেলেও এক প্রান্ত আগলে রেখে অধিনায়ক নাঈম ইসলামকে নিয়ে আকবার দলের রান ২০০ পার করান। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের ৪২তম ওভারের শেষ ফেরেন তিনিও। এরপর জ্বলে ওঠেন নাঈম। ৬ চারে ৩১ বলে শেষ পর্যন্ত ৪৩ রান করে দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন তিনি।
৫২ রানে ৪ উইকেটে নিয়ে ফরহাদ রেজা। দোলেশ্বরের সেরা বোলার। এদিকে আরাফাত সানি, সৈকত আলি ও এনামুল হক জুনিয়র নেন ১টি করে উইকেট।
ডিপিএলের সপ্তম রাউন্ডের ম্যাচে বল হাতে নিয়ে শুরুতেই সাইফ হাসানকে ফিরিয়ে রূপগঞ্জের আনন্দে মাতান নাবিল সামাদ। তবে দলটির বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ান ইমরান উজ্জামান ও ওয়ান ডাউনে নামা মাহমুদুল হাসান। ঠিক সে সময় জ্বলে ওঠেন মোহাম্মদ শহীদ। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে মুক্তারের ক্যাচে বিপজ্জনক ইমরাকে ফেরান এ ডানহাতি। এর কিছুক্ষণ পরই মার্শাল আইয়্যুবকে তুলে নেন তিনি। মাঝে অবশ্য মুক্তার আলি ফিরিয়ে দেন মাহমুদুলকে। তাতে জয়ের স্বপ্ন বুনতে থাকে সাবেক ডিপিএল চ্যাম্পিয়নরা।
৭০ রানে ৪ উইকেট তুলে নিলেও রূপগঞ্জের চিন্তার কারণ হয়ে ছিলেন পাকিস্তানি রিক্রুট সাদ নাসিম। এ ডানহাতি ৬২ বলে ৬১ রান করে বেশ এগোচ্ছিলেন। ঠিক সে সময় আকবার বিপজ্জনক এ ব্যাটসম্যানকে সাজঘরের পথ দেখান। তার আগেই তাইবুরকে শুভাশিষ ও ফরহাদ রেজাকে তুলে নেন শহীদ। প্রতিপক্ষের শেষ তিন উইকেটও ঐ তিন বোলার ভাগ করে নেন। তাতে টানা চতুর্থ জয়ের আনন্দে মাতে সাবেক ডিপিএল চ্যাম্পিয়নরা।
দুর্দান্ত বোলিংয়ের সুবাদে ম্যাচসেরা হয়েছেন শহীদ।
এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচে ৬ জয় নিয়ে রান রেটের সামন্য তারতম্যে রূপগঞ্জ রয়েছে টেবিলের দুইয়ে। অন্যদিকে শীর্ষে স্থানে আগের মতই রয়েছে আবাহনী লিমিটেড। তিনে প্রাইম ব্যাংক ও চারে প্রাইম দোলেশ্বর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ৫০ ওভারে ২৬৫/৯ (নাফীস ৬৮, আকবর ৬৭, নাঈম ৪৩*, মুমিনুল ২৫; রেজা ৪/৫২, সানি ১/১৭, এনামুল ১/৩২)
প্রাইম দোলেশ্বর ক্রিকেট ক্লাব: ৪৬ ওভার ১৯৩ (সাদ ৬১, ইমরান ৩৭, তাইবুর ৩২; শহীদ ৪/২৩, আকবর ২/২৮, শুভাশিস ২/২৮)
ফল: লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৭২ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: মোহাম্মদ শহীদ
Discussion about this post