কোন গঠনতন্ত্রে নির্বাচন হবে তার ঠিক নেই। বিষয়টি আদালতে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের গঠনতন্ত্র নিয়ে মতপার্থক্য-দ্বন্দ্ব চরমে। আদালতেই ঠিক করবেন কোন গঠনতন্ত্রে নির্বাচন হবে। ক্রিকেটপাড়ার খবর, বিষয়টি নিষ্পত্তির পথে। এ সপ্তাহেই শুনানির তারিখ পড়তে পারে। যেভাবে চলছে তাতে আর কয়েকটি শুনানির পর রায় হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। নির্বাচনের মূল বিষয়টি আদালতের হাতে থাকলেও ভেতরে ভেতরে বিসিবি নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। যার একপক্ষে বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন ও তার দল। আর অন্যপক্ষে সাবেক বোর্ডপ্রধান সাবের হোসেন চৌধুরী ও তার বহর।
সাবের হোসেন চৌধুরী ইতোমধ্যেই নির্বাচনের আমেজে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে জানিয়ে দিয়েছেন-আমি নির্বাচন করছি। ওই আয়োজনের বড় অংশই ছিলেন কাউন্সিলররা।
নির্ভরযোগ্য সূত্রের খবর, নাজমুল হাসান পাপনের গ্রুপও নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। তারাও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করতে যাচ্ছে। সেটা অবশ্য বিসিবি আহ্বায়ক কমিটির ব্যানারেই হবে। বর্তমান বোর্ডের অন্যতম সদস্য ও বিসিবিপ্রধানের কাছেরজন আইএইচ মল্লিক কাল বিকেলে সকালের খবরকে জানিয়েছেন-জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে বোর্ডের ইফতার। আর আদালতের রায় হয়ে যাওয়ার দুই থেকে তিন দিনের ভেতরেই তাদের প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠান।
এদিকে বিসিবি নির্বাচনকে সামরে রেখে তত্পর জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদ। কাল কিছু নির্দিষ্ট দাবি নিয়ে সংগঠনের নেতারা ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চেয়ারম্যান আহাদ আলী সরকারের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের সভাপতি ইউসুফ জামিল বাবু (কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক), মহাসচিব আশিকুর রহমান মিকু (সাধারণ সম্পাদক, নড়াইল জেলা ক্রীড়া সংস্থা), কুতুবউদ্দিন আকসির (ঢাকা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক), ফুয়াদ রেদওয়ান (জামালপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক), শামীম আহসান (সাধারণ সম্পাদক, খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা), অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম মিলন (গাইবান্ধা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক) ও রফিকুল ইসলাম লাড্ডু (চুয়াডাঙ্গা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক) ওই দলে ছিলেন।
তারা চারটি সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রীর কাছে।
এক নম্বর দাবি-সংশ্লিষ্ট জেলা ও বিভাগের সাধারণ পরিষদ সদস্যদের মধ্য থেকেই কাউন্সিলর মনোনয়ন দিতে হবে। জেলা বা বিভাগের প্রশাসকের পছন্দের কাউকে দেওয়া যাবে না।
দুই নম্বর দাবি-৬৪ জেলা ও ৭ বিভাগের সব কাউন্সিলর মিলে ভোট দিয়ে প্রত্যেক বিভাগের কাউন্সিলর চূড়ান্ত করবেন। শুধু সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাউন্সিলররা মিলে নয়। এ প্রসঙ্গে তাদের যুক্তি, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে সমান পাঁচটি করে জেলা আছে। সব জেলায় একজন করে কাউন্সিলর দাঁড়িয়ে গেলে ভোট দেবেন কে? তখন তো সবাই একটি করে ভোট পাবে। সব জেলা ও বিভাগের সবাই মিলে ভোট দিলে আর ই সমস্যা থাকবে না।
তিন নম্বর দাবি-জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার মধ্য থেকে একজনকে সহসভাপতি করতে হবে। প্রসঙ্গত, ২০০৮ ও ২০১২ সালের মার্চে বিসিবি কাউন্সিলরদের পাস করা গঠনতন্ত্রে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের মধ্য থেকে একজনকে সহসভাপতি করার কথা বলা আছে।
চার নম্বর দাবি-পরিচালকদের ভোটে নয়, সব কাউন্সিলরের প্রত্যক্ষ ভোটেই বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হবেন।
জানা গেছে, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যান আহাদ আলী সরকার এ দাবির কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। তবে তিনি তাত্ক্ষণিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদ নেতারা জানিয়েছেন, প্রতিমন্ত্রী তাদের আশ্বস্ত করেছেন। এ প্রসঙ্গে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে জাপান যাচ্ছি। ফিরব ১ আগস্ট। তারপর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। এছাড়া বোর্ড কর্তা এবং জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের সঙ্গে বসে জানাব।’
Discussion about this post