বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নতুন আসর সামনে রেখে ক্রিকেটপাড়া এখন সরগরম। টুর্নামেন্ট মাঠে গড়াতে আর বেশি দেরি নেই, ১৯ ডিসেম্বর পর্দা উঠবে বিপিএলের ১২তম সংস্করণের। তবে তার আগেই সবচেয়ে আলোচিত ধাপটি অপেক্ষা করছে ৩০ নভেম্বর, যেদিন অনুষ্ঠিত হবে এবারের নিলাম। ছয় দলের এই আসরে সবচেয়ে বড় চমক হয়ে এসেছে নোয়াখালী এক্সপ্রেসের অন্তর্ভুক্তি, যাদের যুক্ত করায় এবার বিপিএলের কাঠামো নতুন মাত্রা পেয়েছে।
নিলামের আগে দলগুলোকে সুনির্দিষ্ট নিয়মে বেঁধে দিয়েছে বিসিবি। সরাসরি চুক্তিতে সর্বোচ্চ দুইজন দেশি এবং দুইজন বিদেশি ক্রিকেটারকে নেওয়ার সুযোগ থাকলেও বাধ্যতামূলকভাবে এক দেশি ও একজন বিদেশি খেলোয়াড় নিতে হবে প্রতিটি দলকে।
নিলামে বিদেশিদের কোটা পূরণে নির্ধারণ করা হয়েছে অন্তত দুইজনকে কেনার বাধ্যবাধকতা। সব মিলিয়ে বিদেশি খেলোয়াড়দের জন্য প্রতিটি দলের বাজেট ধরা হয়েছে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। নিলামের পর দলগুলো চাইলে পছন্দমতো বিদেশি ক্রিকেটারকেও বাড়তি চুক্তিতে দলে ভেড়াতে পারবে।
এবার মোট ২৫০ জন বিদেশি ক্রিকেটারকে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে বিসিবি। সর্বোচ্চ ‘এ’ ক্যাটাগরির ভিত্তিমূল্য ৩৫ হাজার ডলার, এরপর ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ২৬ হাজার, ‘সি’ ২০ হাজার, ‘ডি’ ১৫ হাজার এবং ‘ই’ ক্যাটাগরির মূল্যও ১৫ হাজার ডলার। ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্রতিটি ডাকে বাড়তি মূল্যও আলাদা-‘এ’ ক্যাটাগরিতে প্রতি ডাকে বাড়বে ৫ হাজার ডলার, আর নিচের ক্যাটাগরিগুলোয় পতনশীল হারে কমতে থাকবে এই বৃদ্ধির পরিমাণ।
দেশি খেলোয়াড়দের তালিকা এবার প্রকাশ করা হয়নি, তবে দলগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে নিলাম থেকে ১২ থেকে ১৪ জন পর্যন্ত স্থানীয় ক্রিকেটার নিতে হবে। দেশি খেলোয়াড়দের ক্যাটাগরিও নির্ধারিত স্তরে সাজানো হয়েছে-‘এ’ ক্যাটাগরির ভিত্তিমূল্য ৫০ লাখ টাকা, ‘বি’ ক্যাটাগরি ৩৫ লাখ, ‘সি’ ২২ লাখ, ‘ডি’ ১৮ লাখ, ‘ই’ ১৪ লাখ এবং সবচেয়ে নিচের ‘এফ’ ক্যাটাগরিতে ভিত্তিমূল্য ১১ হাজার টাকা। এখানেও প্রতি ডাকে ভিন্ন ভিন্ন হারে দাম বাড়বে-শীর্ষ ক্যাটাগরিতে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত এবং সর্বনিম্ন ক্যাটাগরিতে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
দল গঠনের কাঠামোতেও রয়েছে কঠোরতা। ‘এ’ ক্যাটাগরি থেকে ন্যূনতম একজন খেলোয়াড় নিতে হবে, আর ‘বি’, ‘সি’ ও ‘ডি’ ক্যাটাগরি থেকে নিতে হবে অন্তত তিনজন করে। ‘ই’ ক্যাটাগরিতে বাধ্যতামূলক দুজন নেওয়ার নিয়ম থাকবে এবং ‘এফ’ ক্যাটাগরিতে খেলোয়াড় সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে দলের প্রয়োজন অনুযায়ী। স্থানীয় খেলোয়াড়দের জন্য প্রতিটি দল পাচ্ছে সাড়ে চার কোটি টাকার বাজেট, যেখানে সরাসরি চুক্তিতে নেওয়া দুইজন দেশি ক্রিকেটারের খরচ বাজেটের বাইরে বিবেচিত হবে। পাশাপাশি ম্যানেজার, কোচ, বিশ্লেষকসহ সর্বোচ্চ ১২ জন কর্মকর্তাকে নিবন্ধন করার নিয়মও বজায় রয়েছে।
সবমিলিয়ে বিদেশিদের বিশাল তালিকা, দেশিদের কঠোর কাঠামো, নতুন দল যুক্ত হওয়া এবং বাজেটের নির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ-এবারের বিপিএল নিলাম যে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রতিযোগিতামূলক হতে যাচ্ছে, সেটা স্পষ্ট। এখন নজর ৩০ নভেম্বরের দিকে, যেদিন ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো টেবিলে বসেই ঠিক করবে আসন্ন আসরের শক্তিমত্তার হিসাব।








Discussion about this post