ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
টিকে থাকার ম্যাচে ইয়াসির আলি চৌধুরির দায়িত্বশীল ইনিংস ও মুশফিকুর রহিমের সময় উপযোগি ব্যাটিংয়ে ভর করে লড়াইয়ের পুঁজি পায় বেক্সিমকো ঢাকা। কিন্তু স্বাগতিকদের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান ফরচুন বরিশালের আফিফ হোসেন ধ্রব। শেষ পর্যন্ত তার ঝড় থামিয়ে দারুণ এক জয় তুলে নেয় ঢাকা। এরফলে চলতি বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের এলিমিনেটর রাউন্ড থেকে বিদায় নিলো তামিম ইকবালের বরিশাল। আর ঢাকা উঠে গেল দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের এলিমিনেটর ম্যাচে সোমবার ফরচুন বরিশালকে ৯ রানে হারিয়েছে বেক্সিমকো ঢাকা। এদিন আগে ব্যাট করতে নেমে ঢাকা নির্ধারিত ২০ ওভারে করে ৮ উইকেটে ১৫০। জবাব দিতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৪১ রানে থামে বরিশালের ইনিংস।
রান তাড়ার শুরুটা সোমবার দারুণ করেছিল বরিশালের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সাইফ হাসান। কিন্তু ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই সাইফকে বোল্ড করে তাদের জুটি ভাঙেন পেসার শফিকুল। এর এক ওভারই পরই পারভেজ হোসেন ইমন ফেরেন সাজঘরে। ঠিক সে সময় আফিফকে নিয়ে দলের হাল ধরেন তামিম। তৃতীয় উইকেটেপ তারা যোগ করেন ৩২ রান। কিন্তু দলের জন্য এ রান যথেষ্ট মনে হচ্ছিলো না তামিমের কাছে। যে কারণে ইনিংসের ১১তম ওভারে মুক্তার আলির করা শেষ বলে ছক্কা হাঁকাতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু টাইমিংয়ে হেরফের করে বসেন এ বাঁহাতি। আর তাই সীমানায় আকবর আলির ক্যাচে পরিণত হয়ে ফেরেন সাজঘরে। তার আগে তামিমের ব্যাট থেকে আসে ২৮ বলে ২২ রান।
তামিম ফিরলেও বরিশালের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন আফিফ ব্যাট হাতে ঝড় তুলে এক পর্যায়ে ৩২ বলে ৩ চার ও ৪ ছয়ে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। কিন্তু নিজের ইনিংস আর বড় করতে পারেননি। শফিকুলের বলে মুশির হাতে ধরা পড়েন এ তারকা ফেরেন ৩৫ বলে ৫৫ রান করে। শেষ দিকে বরিশালের পরাজয়ের ব্যবধান কমান শুধু মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। এ তারকা করেন ৮ বলে ১৫ রান।
এরআগে টস জিতে বোলিংয়ে নেমে শুরুতে ঢাকাকে চেপে ধরে বরিশাল। দ্বিতীয় ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে লফটেড শটে বাউন্ডারির পর স্লগ করতে গিয়ে উইকেট হারান মোহাম্মদ নাঈম শেখ। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান এবার করেন ১১ বলে ৫। এদিকে তিনে নেমে আল আমিন করেন ০। তাকে ফেরান তাসকিন। এর কিছুক্ষণ পর সোহরাওয়ার্দী শুভ বোল্ড করে ফেরান সাব্বির রহমানকে (১৪ বলে ৮)। যে কারণে বিপদে পড়ে ঢাকা। পরে অবশ্য স্বাগতিকদের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলি। ৪র্থ উইকেট জুটিতে তারা ৩৯ বলে ৫০ রান যোগ করেন। তবে হাফ সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেছেন মুশফিক। কামরুল ইসলাম রাব্বীকে সুইপ করতে যেয়ে স্কাই ক্যাচে থেমেছেন ঢাকা অধিনায়ক (৩০ বলে ৪ চার,১ ছক্কায় ৪৩)। ৫ম উইকেট জুটিতে ইয়াসির-আকবর আলীর দারুন পার্টনারশিপে ১৯ বলে ৩৬ বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল ঢাকাকে। কামরুল ইসলাম রাব্বীকে এক ওভারে ২ ছক্কা এক বাউন্ডারিতে মাতানো আকবর আলী মিরাজের বলে লং অনে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে (৯ বলে ২১) ঢাকার বড় স্কোরের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। এক এন্ড আগলে রেখে হাফ সেঞ্চুরির পর কামরুল ইসলাম রাব্বীর বলে এলবিডাব্লুউতে থেমেছেন ইয়াসির (৪৩ বলে ৩ চার,২ ছক্কায় ৫৪)। তারপরও ইয়াসিন-আকবদের সৌজন্যে শেষ ৬ ওভারে ঢাকা তুলতে পারে ৬৫। যে কারণে বরিশালের সামনে চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায় মুশির দল।
বরিশালের হয়ে তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ করেন নিয়ন্ত্রিত বোলিং। ৪ ওভারে ২২ রানে মিরাজের শিকার ২ উইকেট। তাসকিনের প্রথম স্পেল ছিল ৩-০-৯-১।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বেক্সিমকো ঢাকা: ২০ ওভারে ১৫০/৮ (নাঈম ৫, সাব্বির ৮, আল আমিন ০, মুশফিক ৪৩, ইয়াসির ৫৪, আকবর ২১, মুক্তার ৬*, রবি ৫, নাসুম ১; তাসকিন ৪-০-২১-১, মিরাজ ৪-০-২৩-২, সুমন ৪-০-৩৩-০, সোহরাওয়ার্দী ৪-০-৩২-১, কামরুল ৪-০-৪০-২)।
ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৪১/৯ (তামিম ২২, সাইফ ১২, পারভেজ ২, আফিফ ৫৫, হৃদয় ১২, সোহরাওয়ার্দী ০, অঙ্কন ১৫, মিরাজ ১৫, সুমন ৫, তাসকিন ০*; নাসুম ২-০-২৫-০, রুবেল ৪-০-২২-২, শফিকুল ৪-০-৩৯-৩, রবি ৪-০-১৫-১, আল আমিন ৪-০-২২-২, মুক্তার ২-০-১৮-৩)।
ফল: বেক্সিমকো ঢাকা ৯ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: ইয়াসির আলি চৌধুরি।
Discussion about this post