ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
এক ম্যাচ পরই স্বরুপে ফিরলেন নাঈম ইসলাম। ব্যাট হাতে দলকে দিলেন সামনে থেকে নেতৃত্ব। তার সঙ্গে ভারতীয় রিক্রট ঋষি ধাওয়ান ও নিউজিল্যান্ড সফর থেকে ফেরা মুমিনুল হকও খেললেন দারুণ। তারপরও একটা সময় শঙ্কা ভর করেছিল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য নাইম বীরত্বে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে নারায়নগঞ্জের দলটি। এর ফলে এক ম্যাচ পরই আবারও জয়ে ফিরল সাবেক ডিপিএল চ্যাম্পিয়নরা।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে মোহামেডানের দেয়া ২৯৬ রানের লক্ষ্যে পৌঁছাতে লিজেন্ডের খেলতে হয় ৪৯.২ ওভার। এজন্য অবশ্য দলটির হারতে হয় ৬টি উইকেট। দুর্দান্ত জয় পেতে সাবেক ডিপিএল চ্যাম্পিয়নদের হয়ে ৯২ বলে ৮ চারে ৮৫ রান করেন অধিনায়ক নাঈম ইসলাম। এদিকে ঋষি ধাওয়ান ৬১ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে করেন ৫১ রান। আর মুমিনুলের ব্যাট থেকে আসে ৫৪ বলে ৫৫ রান। এ বাঁহাতির ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ২টি ছয়ের মার।
এরআগে টস জিতে বল হাতে লিজেন্ডসদের দারুণ শুরু এনে দেন ঋষি ধাওয়ান ও মোহাম্মদ শহীদ। ৪২ রানের মধ্যে মোহামেডানের দুই উইকেট তুলে নেন তারা। তবে সাবেক ডিপিএল চ্যাম্পিয়নদের বেশ অস্বস্তিতে ভোগান ওপেনার আবদুল মজিদ। তৃতীয় উইকেটে এ ডানহাতি রকিবুল হাসানের সঙ্গে ৫৪ রানের জুটি গড়ে তুলেন। এর কিছুক্ষণ মুক্তির আলি রকিবুলকে ফিরিয়ে বিপজ্জনক এ জুটি ভাঙেন। সেই রেশ থাকতে থাকতেই ইরফান শুকুরকে রানআউটে কাটা পড়ান আজমির আহমেদ। তারপরও সেই মজিদই পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান লিজেন্ডসদের সামনে। পঞ্চম উইকেটে নাদিফ চৌধুরীর সঙ্গে ৮৩ রানের জুটি গড়ে সাদা-কালোদের বড় সংগ্রহের পথে রাখেন। এরমধ্যে এ ডানহাতি তুলে নেন সেঞ্চুরি। এরপর আর তাকে বেশিদূর এগোতে দেননি মোহাম্মদ শহিদ। ইনিংসের ৪৪তম ওভারের ৫ম বলে নাবিল সামাদের ক্যাচে ফেরান তিনি। তার আগে ১২৬ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে মজি; করেন ১০৭ রান। শেষ দিকে নাদিম চৌধুরীর ৪৭ বলে সমান ৪ টি চার-ছয়ে ৬৪ রানের সুবাদে মোহামেডান বড় স্কোর গড়ে।
লিজেন্ডসের হয়ে ৭০ রানে ৩ উইকেট নেন মোহাম্মদ শহিদ। এদিকে ঋষি ধাওয়ান ৪৮ রানে ১টি ও মুক্তার আলি নেন ৬৭ রানে ১টি উইকেট।
জবাব দিতে শুরুতেই আজমির আহমেদকে হারায় রুপগঞ্জ। মোহাম্মদ নাঈমের ব্যাটে বেশ এগিয়ে চলছিল দলটি। দলীয় ৪০ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৩৩ রানে এ ডানহাতি ফিরলেও পথ হারায়নি সাবেক ডিপিএল চ্যাম্পিয়নরা। শাহরিয়ার নাফিসের সঙ্গে মুমিনুল ৭৭ রানের জুটি গড়ে তোলেন। শেষ পর্যন্ত এ দুই ব্যাটসম্যান ৫ রানের ব্যবধানে ফিরতে বিপদে পড়ে নারায়নগঞ্জের দলটি। ঠিক সে সময় জ্বলে উঠেন নাঈম ইসলাম। ঋষি ধাওয়ানকে নিয়ে মোহামেডানের বোলারদের চোখের জল নাকে এনে ফেলেন তিনি। সেই পথে ধরে তাদের মধ্যে গড়ে উঠে ৯৯ রানের জুটি। এরপরই ৬১ বলে ৫১ রানে রানআউট হয়ে ফিরেন ঋষি। তবে উইকেটরক্ষর জকার আলিকে নিয়ে দ্রুতই জয়ের পথে হাঁটছিলেন নাঈম। শেষ পর্যন্ত এ ডানহাতি দলকে জয়ের খুব কাছে রেখে ফিরে যান। বাকিটা অবশ্য খুব সহজেই পার করেন জকার। তিনি অপরাজিত ছিলেন ২৬ বলে ১ চার ও ১ ছয়ে ৩৪ রানে।
মোহামেডানের হয়ে শফিউল ইসলাম ৬৫ রানে নিয়েছেন ২টি উইকেট। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফর্ম করার ম্যাচ সেরা হয়েছেন নাঈম ইসলাম।
এক ম্যাচ পর জয়ে ফিরে পয়েন্ট টেবিলেরও উন্নতি হয়েছে লিজেন্ডসদের। ৮ম স্থান থেকে উঠে এখন দলটি জায়গা করে নিয়েছে চারে। তাদের আগে রয়েছে আবাহনী লিমিটেড, প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ও মোহামেডান স্পোটিং ক্লাব।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
মোহামেডান স্পোটিং ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৯৫/৭ (অভিষেক ৬, মজিদ ১০৭, তুষার ১৯, রকিবুল ২৯, শুকুর ২৫, নাদিফ ৬৪, সোহাগ ১৭, ডি সিলভা ২৩*, আলাউদ্দিন ০*; শহীদ ৩/৭০, ধাওয়ান ১/৪৮, আসিফ ০/৪৪, মুক্তার ১/৬৭, নাবিল ০/৪৯, নাঈম ০/১৬)
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ৪৯.২ ওভারে ২৯৬/৬ (আজমির ৩, মোহাম্মদ নাঈম ৩৩, মুমিনুল ৫৫, শাহরিয়ার ২৫, নাঈম ৮৫, ধাওয়ান ৫১, জাকের ৩৪*, মুক্তার ১*; শফিউল ২/৬৫, সোহাগ ০/৫৫, সাকলাইন ০/৫৫, আলাউদ্দিন ১/৬০, অভিষেক ০/১৮, ডি সিলভা ০/৪১)
ফল: লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা: নাঈম ইসলাম
Discussion about this post