ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
চোট কাটিয়ে কয়েকদিন আগেই ফিরেছিলেন মাঠে। কিন্তু নিজেকে ঠিক মেলে ধরতে পারেননি তাসকিন আহমেদ। তাই পড়েছিলেন বাদ। একই সঙ্গে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ শিবিরেও জায়গা পাননি তিনি। সব মিলিয়ে সময়টা মোটেও ভাল কাটছিলো না তার। শেষ পর্যন্ত লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের জার্সিতে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) সুপার লিগের ম্যাচে সুযোগ পেয়েই শুক্রবার বল হাতে আগুন ছোটান। অন্যদিকে ফর্মে ফেরার তাগিদ দেয়া শাহরিয়ার নাফিসের ব্যাটও কথা বলব। শুধু তাই নয় এ বাঁহাতি দেখা পেয়েছেন অসাধারণ এক সেঞ্চুরির। শেষ পর্যন্ত তাদের নৈপুণ্যে প্রাইম দোলেশ্বর ক্রিকেট ক্লাবকে উড়িয়ে দিয়েছে নাঈম ইসলামের দল। তাতে এ টুর্নামেন্টের শীর্ষস্থান আরও মজবুত হয়েছে দলটির। একইসঙ্গে শিরোপার স্বপ্নও হয়েছে উজ্জ্বল।
বিকেএসপিতে শুক্রবার প্রাইম দোলেশ্বরকে ৭ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে রূপগঞ্জ। টস হেরে বল হাতে নিয়ে সাবেক ডিপিএল চ্যাম্পিয়নদের দারুণ শুরু এনে দেন তাসকিন আহমেদ (৪/৫৪) ও মোহাম্মদ শহিদ (৩/৩৫)। শেষ পর্যন্ত তাদের নৈপুণ্যে দোলেশ্বরকে ৪৫ ওভারে ২০৫ রানে গুটিয়ে দেয় লিজেন্ডসরা। জবাব দিতে নেমে শুরুতেই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈমকে হারালেও নারায়ণগঞ্জের দলটি বড় কোন সমস্যায় পড়তে দেননি মেহেদি মারুফ ও শাহরিয়ার নাফীস। তাদের দ্বিতীয় উইকেট জুটির করা ১০০ রানে ভর করে জয়ের পথে এগোতে থাকে দলটি। শেষ পর্যন্ত নাফিসের অপরাজিত ১১৩ রানে ভর করে ৪৪.২ ওভারেই মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে লিজেন্ডসরা।
শুক্রবার সুপার লিগে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে শুরুতেই রূপগঞ্জের উইকেট এনে দেন মোহাম্মদ শহীদ। ডানহাতি এ পেসার ইনিংসের ৫ম ওভারের শেষ বলে দোলেশ্বর ওপেনার জসিমউদ্দিনকে ফিরিয়ে দেন। এরপর সাইফ হাসান ও সৈকত আলি কিছুটা বিপদে ফেলেছিলেন লিজেন্ডসদের। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে মোহাম্মদ নাঈমের ক্যাচে সাইফকে ফিরিয়ে দেন তাসকিন। এর পরপরই মার্শাল আইয়ুবকে এ ডানহাতি সাজঘরের পথ দেখান। তাতে ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে রূপগঞ্জ।
মাঝে ফরহাদ হোসেনকে ফেরান ঋষি ধাওয়ান। তবে এক প্রান্ত আগলে অন্যরকম কিছুর আভাস দিয়েছিলেন সৈকত আলি। এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান শুক্রবার বেশ খেলছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় স্পেলে ফিরেই তাকে ৭২ রানে থামিয়ে দেন তাসকিন। এর কিছুক্ষণ পরই তাইবুর রহমানকে নিজের চতুর্থ শিকারে পরিণত করেন এ ডানহাতি। যে কারণে বেশিদূর এগোতে পারেনি দোলেশ্বর। পরে প্রতিপক্ষের লেজ গুটিয়ে দেন শহিদ।
৯ ওভারে ৫৪ রানে ৪ উইকেট নেন তাসকিন। অন্যদিকে সমান ওভারে ৩৫ রানে শহিদ পকেটে পুরেন ৩টি উইকেট। এছাড়া ভারতীয় রিক্রুট ঋষি ধাওয়ান ৭ ওভারে ৩২ রানে নেন ২টি উইকেট।
লক্ষ্য তাড়ায় শুক্রবার দ্বিতীয় ওভারেই মোহাম্মদ নাঈমকে হারায় রূপগঞ্জ। তবে দ্বিতীয় উইকেটে মেহেদি মারুফ ও শাহরিয়ার নাফিস ৯৯ রানের জুটি গড়ে তার অভাব বুঝতে দেননি। এরপরই মারুফ ব্যক্তিগত ৪১ রানে ফেরেন মারুফ। তবে লিজেন্ডসদের পথ হারাতে দেননি নাফিস। বাঁহাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান তৃতীয় উইকেটে আসিফ আহমেদের সঙ্গে উপহার দেন ৫১ রানের আরেকটি ভালো জুটি। এরপর ফেরেন আসিফ।
আসিফ ফিরলেও নাঈমকে নিয়ে আরেকটি হাফসেঞ্চুরি করা জুটিতে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান শাহরিয়ার। শেষ পর্যন্ত বাঁহাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ১৪২ বলে অপরাজিত থাকেন ১১৩ রানে। তার ইনিংস গড়া ১১ চার ও ১ ছয়ে। অন্যদিকে নাঈম ২৭ বলে সমান দুই চার-ছয়ে অপরাজিত থাকেন ৩২ রানে। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন শাহরিয়ার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব: ৪৫ ওভারে ২০৫ (সাইফ ৩৭, জসিম ২, সৈকত ৭২, মার্শাল ২, ফরহাদ ১১, তাইবুর ২৭, রেজা ১৯, মাহমুদুল ২৫*, এনামুল ১, মানিক ০, আবু জায়েদ ০, শহীদ ৩/৩৫, নাবিল ০/২৮, ধাওয়ান ২/৩২, তাসকিন ৪/৫৪, মুক্তার ০/৫২)
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ৪৪.২ ওভারে ২০৮/৩ (মারুফ ৪১, মোহাম্মদ নাঈম ০, শাহরিয়ার ১১৩*, আসিফ ১৭, নাঈম ৩২*; রেজা ০/১৫, মানিক ১/৩২, মাহমুদুল ০/৩৭, আবু জায়েদ ০/১৬, এনামুল জুনিয়র ১/৪৯, তাইবুর ০/২৩, সাইফ ১/৩৪)
ফল: লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা: শাহরিয়ার নাফিস
Discussion about this post