আচমকা সিদ্ধান্তটা জানিয়েছেন তিনি। অথচ চুপ থা কলে জায়গা মিলতো একাদশে। কিন্তু তামিম ইকবাল বিবেকের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন। সেখান থেকে যে উত্তর মিলেছে, তাই করেছেন। বুধবার দুপুরে নিজেই সাফ জানিয়ে দেন, বিশ্বকাপে খেলছেন না।
ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তামিম।
অনেক দিন ধরে খেলছেন জাতীয় দলে। তিনি দেশসেরা ওপেনার। তাকে রাখা হবে বিশ্বকাপ দলে। কিন্তু তামিম নিজেই জানিয়ে দেন বাংলাদেশের টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে থাকবেন না। তিনি টি-টুয়েন্টিতে নিজের শেষ ম্যাচ লেখেছেন সেই ২০২০ এর মার্চে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এই সময়ে অন্যরা জায়গা পেয়ে বেশ মানিয়ে নিয়েছে। তাদেরই সুযোগ করে দিতে সরে দাঁড়ালেন।
এমন ঘোষণা ভিন্ন চোখে দেখছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। বাংলাদেশের সাবেক সফল অধিনায়ক ফেসবুকে নিজের প্রোফাইলে তামিম ইকবালের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেটি তুলে ধরা হলো এখানে-
‘তামিম ইকবাল খান, আনডাউটলি বাংলাদেশের একজন সেরা ব্যাটসম্যান। স্ট্যাটস ও তাই বলে। টি-২০ বিশ্বকাপ খেলার সব যোগ্যতা তার আছে। ক্রিকেট বোর্ড টিম ম্যানেজমেন্ট সবাই তাকে দলে রাখবে এটা সবারই জানা। কেন তামিম এ সিদ্ধান্ত নিলো তার যুক্তিও আছে অনেক। প্রথমত; তামিমের ইনজুরি, তারপর প্রায় এই নিয়ে পেছনের চারটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ সে খেলতে পারেনি। তার মানে প্রায় ১৬টা ম্যাচ, এতে হঠাৎ কোন ম্যাচ না খেলে মাঠে নামার পর নিজের ওপর নিজের বিশাল চাপ সৃষ্টি হবে। যা পরে ওর ওয়ানডে বা টেস্টে ওকে ক্যারি করতে হতে পারে।
কথা হলো এখন যারা খেলছে তারা তো রান করেনি। আবার সেখানেও কথা আছে। যে উইকেটে খেলা হচ্ছে সেখানে রিয়াদ ছাড়া আর কোন দলের খেলোয়াড়ই ৫০ ছুঁতে পারেনি। ট্রু উইকেটে বিচার না করা একেবারেই অন্যায় হবে সৌম্য, লিটন বা নাঈম এর সাথে। সমস্ত কঠিন সিরিজগুলো সত্যিই এই ছেলেগুলো পার করছে।
তামিমের সিদ্ধান্তকে জাস্টিফাই করা খুব কঠিন কাজ না। পুরোটাই পজিটিভভাবে দেখলে সেটা হলো— প্রথমতো এটা একান্তই তামিমের সিদ্ধান্ত। এরপর সবচেয়ে বড় যে বিষয়টা ছিল তামিম সব সময় ড্রেসিংরুমে ওয়েলকামিং পারসন। কিন্তু ১৬টা আন্তর্জাতিক ম্যাচ বা কোন প্র্যাকটিস ম্যাচ ছাড়া এবার সে কতোটুকু ওয়েলকামিং হতো তাও হয়তো তাকে ভাবিয়েছে। আর কেউ না বুঝুক তামিম নিজেও জানে এখন ব্যাটসম্যানরা কেমন উইকেটে ব্যাটিং করছে। যেখানে তাদের ভুল থাকলেও তাদের খুব বেশি কিছু করার নাই। আজকের উইকেট তো অস্ট্রেলিয়ার সময়ের উইকেট থেকেও ভয়ানক স্লো। এরপর কি অপেক্ষা করছে কে জানে? আর এতোকিছুর পরও তামিমকে দলে ঢোকার জন্য কারও খারাপ খেলার প্রয়োজনও নেই। এটা সবারই জানা। কারণ, সিম্পলি তামিম দলের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন। তাই আমার কাছে মনে হয়েছে তামিম তার নিজের সিদ্ধান্ত নিজে ভেবেই নিয়েছে যেটাকে সম্মান জানানো উচিত।
টপ অর্ডারের অস্থিরতাও হয়তো কিছুটা কমবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- কোন কোন সিদ্ধান্ত মানুষের জীবন পাল্টে দেয়। আমার কাছে মনে হয় এই সিদ্ধান্তের কারণে তামিম যখন ওয়ানডের নেক্সট ম্যাচেই ক্যাপ্টেন হিসাবে মাঠে নামবে এই ছেলেগুলো ওর জন্য জীবন বাজি রেখে খেলবে। কারণ, কেউ করুক আর না করুক তামিম নিজেই এই ছেলেগুলোর হার্ডওয়ার্ককে প্রপার জাস্টিফাই করেছে।
আর তামিম স্টিল দ্যা বেস্ট এন্ড উইল বি রিমেইন ইনশাল্লাহ। এই ফরম্যাটে জোর করে খেলে অবশ্যই টেস্ট, ওয়ানডের সেরা ব্যাটসম্যানকে আপসেট কেউ দেখতে চাইবে না। তামিমের এখনও অনেক ম্যাচ জেতানোর বাকি আছে।
ইউ বিউটি খান, উইল বি মিস ইউ ইন ওয়ার্ল্ডকাপ।
বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে জিতেছে একরকম নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়েই। এভাবে উড়াতে থাকো বন্ধুরা।
Discussion about this post