ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
জয়ের সুবাস পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। টানা চতুর্থ দিনের মতো দাপট থাকল লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। তারই পথ ধরে জয়ের ভিতটাও গড়ে নিয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। ঢাকা টেস্ট জিততে পঞ্চম ও শেষ দিনে টাইগারদের চাই জিম্বাবুয়ের শেষ ৮ উইকেট। আর সফরকারীদের চাই আরো ৩৬৭ রান। যা কীনা সত্যিকার অর্থেই মিশন ইমপসিবল। ইতিহাস গড়লেই কেবল জিততে পারবে তারা। ৮ উইকেট নিয়ে পুরো একটি দিন কাটিয়ে অসম্ভবই মনে হচ্ছে।
মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বুধবার চতুর্থ দিনের খেলা শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ ২ উইকেট হারিয়ে ৭৬ রান। ব্রেন্ডন টেইলর ৪ ও শন উইলিয়ামস ২ রানে ব্যাট করছেন। শেষ বেলায় দুই উইকেট তুলে নিয়ে কাজ এগিয়ে রাখল বাংলাদেশের বোলাররা। দলীয় ৬৮ রানে ওপেনার হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ব্যাট প্যাড ক্যাচ তুলে আউট। এরপর ২ রান পরই সাজঘরের পথ ধরেন আরেক ওপেনার ব্রায়ান চারি।
ম্যাচটাতেও নিয়ন্ত্রণ এসে যায় টাইগারদের। সিরিজ সমতায় শেষ করতে এখানে জয়ের কোন বিকল্প নেই। কারণ সিলেটে প্রথম টেস্টে হেরে পিছিয়ে আছে মাহমুদউল্লার দল।
বুধবার টেস্টের চতুর্থ দিনে চা বিরতিতে যাওয়ার আগে ৬ উইকেটে ২২৪ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। তখন জিম্বাবুয়ের জিততে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৪৩ রান। টেস্ট ইতিহাসে এতো বড় স্কোর জয়ের রেকর্ড নেই কোন দেশের। জিততে হলে গড়তে হবে নতুন এক বিশ্বরেকর্ড। টেস্টে সর্বোচ্চ ৪১৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই রেকর্ড গড়ে তারা।
মিরপুর শেরবাংলা স্টেডিয়ামে সর্বোচ্চ ২০৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের রেকর্ড দখলে ইংল্যান্ডের। ২০১০ সালে বাংলাদেশকে হারিয়েছিল তারা।
এর আগে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ চাপের মুখে দাঁড়িয়ে তুলেন অসাধারণ এক শতরান। তার ব্যাটে সেঞ্চুরি আসতেই ইনিংস ঘোষণা করেন। তিনি অপরাজিত থাকেন ১০১ রানে। প্রায় সাড়ে ৮ বছর পর মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে সেঞ্চুরি। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেন তিনি। ১২২ বলে অপরাজিত ১০১ রানের ইনিংস ছিল চারটি চার ও দুটি ছক্কা।
মেহেদী হাসান মিরাজ অপরাজিত ২৭ রানে। এর আগে মোহাম্মদ মিঠুন করেন ৬৭ রান। ক্যারিয়ারের অভিষেক টেস্টেই হাফসেঞ্চুরি পেলেন তিনি। বুঝিয়ে দিলেন জায়গা করে নিতেই এসেছেন তিনি। এর আগে অবশ্য চাপে পড়ে দল। জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন না করিয়ে সকালে ব্যাট করতে নেমেই বিপর্যয়। চার টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান লিটন দাস (৬), ইমরুল কায়েস (৩), মুমিনুল (১) আর মুশফিক (৭) উইকেটে দাঁড়াতে পারেন নি।
মঙ্গলবার দিনের শেষে জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস ৩০৪ রানে অলআউট হয়। ২১৮ রান লিড নেয় বাংলাদেশ। ১ম ইনিংসে ৭ উইকেটে ৫২২ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা। মুশফিকুর রহীম বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের (২১৯) ইনিংস খেলেন। মুমিনুল হক করেন ১৬১ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৫২২/৭ (ইনিংস ঘোষণা)
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ৩০৪/১০
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৫৪ ওভারে ২২৪/৬ (ইনিংস ঘোষণা) (লিটন ৬, ইমরুল ৩, মুমিনুল ১, মিঠুন ৬৭, মুশফিক ৭, মাহমুদউল্লাহ ১০১*, আরিফুল ৫, মিরাজ ২৭*; জার্ভিস ২/১৭, টিরিপানো ২/৩১, উইলিয়ামস ১/৬৯, রাজা ১/৩৯)।
জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৪৪৩) ৩০ ওভারে ৭৬/২ (মাসাকাদজা ২৫, চারি ৪৩, টেলর ৪*, উইলিয়ামস ২*; তাইজুল ১/৩৪, মিরাজ ১/১৬)
Discussion about this post