বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১২তম আসরকে ঘিরে অবশেষে বিস্তারিত পরিকল্পনা জানালো বিপিএল গভার্নিং কাউন্সিল। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে জানানো হয়েছে, আগামী ৩০ নভেম্বর বিকেল তিনটায় রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে অনুষ্ঠিত হবে এবারের প্লেয়ার ড্রাফট।
ছয় দলকে নিয়ে আয়োজিত হবে এবারের আসর, যেখানে নতুন সংযোজন হিসেবে জায়গা পেয়েছে নোয়াখালী এক্সপ্রেস-যা বিপিএলের ইতিহাসে এক ব্যতিক্রমী ঘটনা, কারণ নিলামের মাত্র এক সপ্তাহ আগে যুক্ত হলো ষষ্ঠ দলটি।
বিপিএলে দল বাড়ানোর পেছনে বিভিন্ন বাস্তব কারণ রয়েছে বলে ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যসচিব ইফতেখার রহমান মিঠু। পাঁচ দল চূড়ান্ত হওয়ার পর ক্রিকেটারদের সংগঠন কোয়াব অতিরিক্ত একটি দলের যুক্তির কথা তোলে, যাতে আরও ১৫–২০ জন স্থানীয় ক্রিকেটারের আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়। তবে অর্থনৈতিক শর্ত পূরণ করতে না পারায় প্রথমদিকে কেউ নির্বাচিত হয়নি।
শেষ মুহূর্তে নতুন করে আগ্রহ প্রকাশকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে দেশ ট্রাভেলস ব্যাংক গ্যারান্টির বদলে সরাসরি নগদ অর্থ জমা দেয়, যা বিসিবিকে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। তাদের মালিকানাতেই নোয়াখালী এক্সপ্রেস যুক্ত হয়েছে এবারের আসরে। সূচি সাজানোর ক্ষেত্রেও ছয় দল রাখা সুবিধাজনক হবে বলে মত দিয়েছেন ইফতেখার।
এবারের বিপিএল শুরু হবে ১৯ ডিসেম্বর সিলেট থেকে, এবং ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ১৬ জানুয়ারি। তবে আরেক ঘোষণা অনুযায়ী বিসিবি টুর্নামেন্টের নতুন সূচিতে ২৩ জানুয়ারিকে ফাইনালের তারিখ হিসেবে রেখেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে ঢাকায়, ১৭ ডিসেম্বর। বিদেশি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রেও বিপিএল এবার অভূতপূর্ব আগ্রহ পেয়েছে; ৫০০ জনের বেশি বিদেশি ক্রিকেটার আবেদন করলেও বাছাই করে ২৫০ জনকে ড্রাফটের তালিকায় রেখেছে বিসিবি।
এবারের আসরে অংশ নেবে রংপুর রাইডার্স, ঢাকা ক্যাপিটালস, সিলেট টাইটান্স, চট্টগ্রাম রয়্যালস, রাজশাহী ওয়ারিয়র্স এবং নবাগত নোয়াখালী এক্সপ্রেস। রংপুর রাইডার্সের মালিকানা পেয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপের টগি স্পোর্টস, চট্টগ্রাম রয়্যালসের মালিকানা পেয়েছে ট্রায়াঙ্গাল সার্ভিস। রাজশাহীর ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়েছে নাবিল গ্রুপ, সিলেটের মালিক ক্রিকেট উইথ সামি, ঢাকার দলে আছে চ্যাম্পিয়ন স্পোর্টস (রিমার্ক–হারল্যান), এবং নোয়াখালী এক্সপ্রেসের মালিক হয়েছে দেশ ট্রাভেলস।
নিলামের আগে প্রতিটি দল দুইজন স্থানীয় এবং দুইজন বিদেশি ক্রিকেটারের সঙ্গে সরাসরি চুক্তির সুযোগ পাচ্ছে। ঢাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছে তাসকিন আহমেদ ও সাইফ হাসানকে, রাজশাহীতে আছে নাজমুল হোসেন শান্ত ও তানজিদ হাসান তামিম। সিলেট দলে যুক্ত হয়েছে নাসুম আহমেদ এবং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। রংপুর সরাসরি চুক্তি করেছে নুরুল হাসান সোহান এবং মুস্তাফিজুর রহমানকে। চট্টগ্রাম রয়্যালসের দলে থাকছেন তানভির ইসলাম ও শেখ মেহেদী। বিদেশি ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন দল তাদের পছন্দমতো খেলোয়াড় বেছে নিয়েছে।
বিপিএল আয়োজন নিয়ে এবারের এক বিশেষ দিক হলো, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান আইএমজি এই আসরে সম্পূর্ণভাবে যুক্ত হচ্ছে না। তিন বছরের জন্য তাদের সঙ্গে বিসিবির চুক্তি থাকলেও তা কার্যকর হবে পরের বিপিএল থেকে, ফলে এবার খণ্ডকালীন দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্তও কার্যকর হয়নি।
সব মিলিয়ে বিপিএলের নতুন সংস্করণকে ঘিরে জমে উঠেছে নানা আলোচনা। নতুন দল যুক্ত হওয়া থেকে শুরু করে বিদেশি আবেদন, সূচি পুনর্বিন্যাস এবং সরাসরি চুক্তির তালিকা, সবকিছু মিলিয়ে এবারের বিপিএলকে আগামীর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও আকর্ষণীয় একটি আসর হিসেবে দেখছে বিসিবি।








Discussion about this post