ফুটবল ইতিহাসে ব্রাজিল মানে রাজত্বের প্রতীক। যেখানেই নাম, সেখানেই গ্যালারিতে উল্লাস, প্রতিপক্ষের চোখে ভীতি। কিন্তু মঙ্গলবার টোকিওর আজিনোমোতো স্টেডিয়ামে সেই দৃশ্যটা ছিল উল্টো। প্রতিপক্ষ জাপান, আর সেই জাপানই যেন শিরোপাধারী কোনো দল- উচ্ছ্বাসে ভাসছে, ইতিহাস লিখছে, ব্রাজিলকে হারিয়ে ফুটবল দুনিয়াকে অবাক করে দিচ্ছে।
দিন দুয়েক আগেই দক্ষিণ কোরিয়াকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল সেলেসাওরা। সেই ব্রাজিলই আজ যেন নিজের ছায়া। কার্লো আনচেলত্তির দল ম্যাচের প্রথম অংশে খেলছিল রাজকীয় ফুটবল। পাওলো হেনরিকে ও গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লির গোলে প্রথমার্ধেই ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় তারা। সবার চোখে তখনও ‘স্বাভাবিক’ ব্রাজিল জয়ই নিশ্চিত বলে মনে হচ্ছিল।
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই চিত্রনাট্য বদলে যায়। জাপান যেন হঠাৎ নতুন প্রাণ পায়। ৫১তম মিনিটে তাকুমি মিনামিনো প্রথম গোল করে ম্যাচে ফেরান স্বাগতিকদের। তারপর যেন ব্রাজিলের ডিফেন্স ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। কেইতো নাকামুরা ও আয়াশি উয়েদা মাত্র ১৯ মিনিটের ব্যবধানে আরও দুটি গোল করে ব্রাজিলকে স্তব্ধ করে দেন। ৩-২! স্কোরলাইনটি তখন কেবল একটি সংখ্যার পরিবর্তন নয়, এটি ইতিহাসের নতুন অধ্যায়।
এই জয় জাপানের জন্য কেবল একটি ম্যাচজয় নয়, বরং আত্মমর্যাদার প্রতীক। ২৪ বছর ধরে ব্রাজিলের বিপক্ষে জয়হীন থাকা দলটি এবার ফুটবল মানচিত্রে নিজেদের অবস্থান জানান দিল জোরালোভাবে। এর আগে দুই দলের ১৩ লড়াইয়ের ১১টিতেই জয় ছিল ব্রাজিলের, দুটি ম্যাচ ড্র। এবার সেই ধারায় এল ভাঙন।
ব্রাজিলের জন্য এটি এক ঐতিহাসিক ধাক্কা। ১৯৯৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে হারের পর এটাই তাদের প্রথম পরাজয় কোনো এশিয়ান দলের বিপক্ষে। ২৬ বছর পর ‘এশিয়ার মাটি’ আবার হাসল ব্রাজিলের বিপক্ষে।
Discussion about this post