ওয়ানডে সিরিজ শেষে বাংলাদেশের শিবিরে এখন আত্মবিশ্বাসের জোয়ার। বিশেষ করে শেষ ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে স্বাগতিকরা। সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকারের দুর্দান্ত ওপেনিং জুটি, স্পিন সহায়ক কালো উইকেটে তিন শ ছুঁইছুঁই রান, আর পরে স্পিনের ঘূর্ণিতে প্রতিপক্ষকে মাত্র ১১৭ রানে গুটিয়ে দেওয়া-সব মিলিয়ে ১৭৯ রানের রেকর্ড জয়ে ভরসা ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ।
ক্যারিবীয় দলের কোচ ড্যারেন স্যামিও অকপটে স্বীকার করেছেন, ‘মানসিকতা ও স্কিলে বাংলাদেশ আমাদের চেয়ে ভালো ছিল।’
তবে এবার চ্যালেঞ্জ ভিন্ন। দুই দলই চট্টগ্রামে পা রেখেছে আসন্ন তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য। আগামী পরশু শুরু হবে সিরিজটি বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে। শেষ ওয়ানডের বড় জয়ের রেশ এখনো সতেজ, কিন্তু টি-টোয়েন্টি এক আলাদা মঞ্চ-যেখানে পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশ নয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজই এগিয়ে। আইসিসির র্যাঙ্কিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আছে ছয় নম্বরে, আর বাংলাদেশ তিন ধাপ নিচে, নয় নম্বরে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোচ স্যামি এবারও আশাবাদী তার নির্ভরযোগ্য ব্যাটার শাই হোপকে নিয়ে, যিনি দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দলের ভরসা হয়ে লড়েছেন। তার সঙ্গে আছেন টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ রভম্যান পাওয়েল, রোমারিও শেফার্ড ও গুদাকেশ মোতি। এই খেলোয়াড়রা ছন্দে ফিরলে বাংলাদেশের কাজ সহজ হবে না। তবে চেনা মাঠ ও কন্ডিশনের কারণে কিছুটা সুবিধা থাকবে স্বাগতিকদের পক্ষেই।
চট্টগ্রামের উইকেট ঢাকার মতো কালো না হলেও স্পিনের ভূমিকা যে কম হবে না, তা বলাই যায়। এই কারণেই সফরকারী দল চোটগ্রস্ত পেসার শামার জোসেফের বদলি হিসেবে কোনো পেসার নয়, অন্তর্ভুক্ত করেছে বাঁহাতি স্পিনার খ্যারি পিয়েরকে। অন্যদিকে, মিরপুরে যাদের স্পিনে কাবু হতে হয়েছে, সেই স্পিন আক্রমণকেই আরও ধারালো রূপে মাঠে নামাতে প্রস্তুত বাংলাদেশ।
এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি ছন্দ। তরুণ সাইফ হাসান ও রিশাদ হোসেন দলে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছেন। রিশাদের নিয়ন্ত্রিত লেগ স্পিনের প্রশংসায় মেহেদী হাসান মিরাজ বলেছেন, ‘সে এখন দলের জন্য আশীর্বাদ। বিদেশি লিগে খেলে আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে।’ একইভাবে সাইফের ধারাবাহিক পারফরম্যান্সও মিরাজের চোখে দলের বড় পাওয়া, ‘অনেকে ভাবত সাইফ শুধু টেস্টের খেলোয়াড়। কিন্তু ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টিতেও সে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছে।’
মিরাজ আরও জানিয়েছেন, দল এখন বিশ্বকাপের আগে নিজেদের ভারসাম্য খুঁজে পাওয়ার প্রক্রিয়ায় আছে, ‘আমরা বোঝার চেষ্টা করছি কোন পজিশনে কে ভালো করছে, তবে শেষ পর্যন্ত পারফরম্যান্সই আসল।’
এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্বে থাকা লিটন দাসও নতুন উদ্যমে ফিরেছেন। সাইড স্ট্রেইনের চোট কাটিয়ে তিনি এখন সম্পূর্ণ ফিট এবং প্রস্তুত। অনুশীলনে তাঁর আগ্রহ ও মনোযোগেই বোঝা যাচ্ছে, শুধু অধিনায়ক হিসেবেই নয়, ব্যাটার হিসেবেও সামনে থেকে দলকে এগিয়ে নিতে চান তিনি।
সিরিজের সব ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ২৭, ২৯ ও ৩১ অক্টোবর।










Discussion about this post