সিলেটে হতাশা, চট্টগ্রামে দাপট-তাইজুল ইসলামের টেস্ট সিরিজের গল্প যেন নাটকীয় উত্থান-পতনের এক নিখুঁত চিত্র। প্রথম টেস্টে ব্যর্থতার পর দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনেই পাঁচ উইকেট নিয়ে নিজের সামর্থ্য আবারও প্রমাণ করলেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার।
চট্টগ্রামে টস জিতে ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ে লাঞ্চের সময় পর্যন্ত শক্ত অবস্থানে থাকলেও, শেষ বিকেলে তাইজুলের দুর্দান্ত স্পেলে এলোমেলো হয়ে যায় সফরকারীদের ব্যাটিং লাইনআপ। প্রথম দিন শেষে ২২৭ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে পড়ে জিম্বাবুয়ে, যার বড় কৃতিত্ব তাইজুলের ৬০ রানে ৫ উইকেটের বোলিং।
সিলেট টেস্টে তাইজুলের পারফরম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মতো দুর্বল। দুই ইনিংসে ২৬ ওভার বল করে ১২৩ রান খরচায় নিয়েছিলেন মাত্র ২ উইকেট। তখন থেকেই সমালোচনার ঝড় বইছিল তার বিরুদ্ধে। নিজেও তা স্বীকার করে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সিলেটে যেভাবে বল করেছি, তা আমার মতো একজন অভিজ্ঞ বোলারের জন্য ভালো কিছু ছিল না। এখানে ফিরে ঘুরে দাঁড়াতে পেরে তৃপ্তি লাগছে।’
কিন্তু সমালোচনার প্রশ্নে রীতিমতো চটলেন ৩৩ বছর বয়সী এই স্পিনার। কড়া ভাষায় জানালেন, ‘একটা ম্যাচ দেখে যারা সমালোচনা করে, তারা আদৌ খেলা বোঝে কি না, সেটাই প্রশ্ন!’
তৃতীয় উইকেটে ৯০ রানের জুটির পর ওয়েলচ স্বেচ্ছায় অবসর নিলে বাংলাদেশ একটু স্বস্তি পায়। এরপর তাইজুলের ঘূর্ণিতে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে জিম্বাবুয়ের ইনিংস। শেষ সেশনে মাত্র ৬৭ রানে হারায় ৭ উইকেট, যার মধ্যে ৫টিই শিকার করেন তাইজুল। তার নিখুঁত লাইন-লেন্থ আর টার্নিং ডেলিভারিতে পর্যুদস্ত হন উইলিয়ামস, দামারা, ওভটনরা।
তাইজুল স্পষ্ট করে দেন, এই সাফল্যের কৃতিত্ব উইকেটের নয়, তাদের পারফরম্যান্সের, ‘কেউ আমাদের কৃতিত্ব দিতে চায় না। হারার পর উইকেট নিয়ে কথা হয়, তবে আমরা ভালো বল করেছি বলেই কামব্যাক করতে পেরেছি।’
এই মাঠে ৫৭টি টেস্ট উইকেট নিয়ে এগিয়ে চলেছেন তাইজুল। বাংলাদেশের হয়ে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারী এখনো সাকিব আল হাসান (৬৮ উইকেট)। তবে তাইজুলের সামনে সাকিবকে ছাড়িয়ে নতুন মাইলফলক ছোঁয়ার হাতছানি। তাইজুল বলেন, ‘সবাই চায় সেরাদের মধ্যে থাকতে। আমারও লক্ষ্য যতটা সম্ভব ভালো করা। সাকিব ভাই দেশের জন্য অসাধারণ কাজ করেছেন। আমরা সবাই চাই, একসঙ্গে দেশের জন্য বড় কিছু করতে।’
Discussion about this post