নির্বাচনী বাতাস চলে এসেছে ক্রিকেট অঙ্গনে। এ কারণে হঠাত্ই বন্ধ হয়েছে কাদা ছোড়াছুড়ি। সময়ের প্রবাহতায় কথাবার্তায় অনেক সতর্ক ও সাবধানী সাবের হোসেন চৌধুরী আর নাজমুল হাসান পাপন। মুখে কারও নাম না আনলেও এই গত সপ্তাহেও একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে আকার ইঙ্গিতে বিষোদ্গার করেছেন। কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছিল বোর্ডের বর্তমান ও সাবেক সভাপতির মধ্যে বুঝি বাকযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। বিসিবি নির্বাচন হওয়ার আগে বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি প্রধান ও সাবেক সভাপতি নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি করবেন। উত্তপ্ত হবে ক্রিকেটাঙ্গন। কিন্তু বাস্তব অবস্থা উল্টো।
ভেতরে যাই থাকুক, নির্বাচনের আগে ইমেজের কথা চিন্তা করে নেতিবাচক মনোভাব পাল্টে আগের চেয়ে অনেক ইতিবাচক কথাবার্তা বলছেন নাজমুল হাসান পাপন ও সাবের হোসেন চৌধুরী। বোঝাই যাচ্ছে নির্বাচনকে সামনে রেখে একজন আরেকজনকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে চাচ্ছেন না। আর সে কারণেই উত্তেজক কথাবার্তার বদলে মুখের ভাষায়ও এসেছে অনেক নমনীয়তা। এ পথে প্রথম হাঁটা শুরু করেন সাবের হোসেন চৌধুরী। তার করা মন্তব্যর পরিপ্রেক্ষিতে বিসিবি সভাপতি বলেছিলেন-‘সময় আসুক, আমি অনেকের মুখোশ উন্মোচন করে দেব।’
পাল্টা জবাব দেননি সাবের হোসেন চৌধুরী। কূটনৈতিক ভাষায় শুধু নির্বাচন করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, বিসিবি নির্বাচন হবে অবাধ-সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ। এবং যে কোনোরকম প্রভাবমুক্ত। যা আদর্শ নির্বাচন হিসেবে পরিগনিত হয়ে থাকতে পারে।
এবার সে পথে হেঁটেছেন নাজমুল হাসানও। মঙ্গলবার বিকেলে মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে ক্রিকেট বোর্ড আম্পায়ার্স অ্যান্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করতে এসে মিডিয়ার সামনে অনেক কথাই বলেছেন। সাবের হোসেন চৌধুরী বিসিবি নির্বাচন করতে চাইছেন শুনে নেতিবাচকের বদলে বেশ ইতিবাচক মন্তব্যই করেছেন নাজমুল হাসান। বলেছেন, ‘শুনেছি সাবের ভাই নির্বাচন করবেন। এটা তো খুব ভালো কথা। সাবের ভাই যদি নির্বাচন করেন তাহলে আমি খুব খুশি হব। আমি মনে করি তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে।’ সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীকে মুখে স্বাগত জানালেও তার নিজের নির্বাচন করা প্রসঙ্গে বেশ কূটনৈতিক ভাষায় কথা বলেছেন বর্তমান বোর্ডপ্রধান। এ সম্পর্কে তার মন্তব্য- ‘বিসিবির প্রেসিডেন্ট হব এমন কোনো চিন্তা আমার মাথায় কখনই ছিল না। এটা আমি আগেও বলেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীই আমাকে এ দায়িত্ব দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত যে সিস্টেম তাতে তিনিই এটা নিয়োগ দেন। সেভাবেই আমি এসেছি। আমি নির্বাচন করব কি না সেটা এখনই বলতে পারছি না। কারণ প্রধানমন্ত্রী আমাকে নিয়োগ দিয়েছেন, তাই আমি হঠাত্ করে ওনাকে না বলে সরে যেতে পারব না। আমি না থাকতে চাইলেও ওনাকে বলতে হবে আমার।’
তিনি নির্বাচন করবেন কি করবেন না এ সম্পর্কে পরিষ্কার মন্তব্য না করলেও নাজমুল হাসান পাপনের কথায় পরিষ্কার-বোর্ড সভাপতি পদে নির্বাচন হবে। আর সে কারণেই মুখে এমন সংলাপ, ‘আমি সিলেকশনে বিশ্বাসী নই। অনেকে অনেক কথা বলে। বিসিবি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে আসবেন এটা আজকের কথা নয়। ১০-১২ বছর ধরে শুনছি। বিভিন্ন প্রেসিডেন্টের মুখে শুনেছি, বিসিবি প্রেসিডেন্টের নির্বাচিত হয়ে আসার ব্যাপারে তারা প্রস্তাব এনেছেন। কিন্তু কাজটা তো করেন না। আমি কাজটা অন্তত করে দিয়ে যেতে চাই। কে প্রেসিডেন্ট হবেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কাজটা গুরুত্বপূর্ণ।’
Discussion about this post