জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) দ্বিতীয় দিনের খেলা সাজানো ছিল মূলত বোলারদের নিয়ন্ত্রণে। চার ভেন্যুতেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়েছে, দুলেছে ম্যাচের গতি। কিন্তু এই বোলার–নির্ভর দিনের মাঝেও ঢাকার ব্যাটার আশিকুর রহমান তুলে নিয়েছেন দৃষ্টিনন্দন সেঞ্চুরি, আর বরিশালের পেসার রুয়েল মিয়া পৌঁছে গেছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০০ উইকেটের সম্মানজনক মাইলফলকে।
ঢাকা–রাজশাহী ম্যাচ: আশিকুরের অবিচল ব্যাটিং, আনিসুলের আক্ষেপ
রাজশাহীতে দ্বিতীয় দিনের আলো কেড়ে নিয়েছেন আশিকুর রহমান। দিনের শেষে ২৫২/৪ স্কোরে দাঁড়িয়ে থাকা ঢাকার ইনিংসে তিনি অপরাজিত ১১২ রানে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি তাঁর দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। একই ম্যাচে তাঁর সঙ্গে গড়া ১৮৮ রানের পার্টনারশিপে ব্যাট করেছেন আনিসুল ইসলাম, যিনি দুর্ভাগ্যজনকভাবে থেমে গেছেন ৯৭ রানে, মাত্র ৩ রান দূরে রেখে হাতছাড়া হয়েছে প্রথম শ্রেণির প্রথম সেঞ্চুরি।
দিনের শুরুতে ৯ উইকেটে ২৭৫ রান নিয়ে রাজশাহী অলআউট হয় ২৯৮ রানে। শেষ ব্যাটারকে আউট করে ঢাকার অফ স্পিনার আশরাফুল ইসলাম ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফাইফার তুলে নেন।
ধস নামালেন রিশাদ, ইতিহাস গড়লেন রুয়েল
রংপুর বিভাগ প্রথম ইনিংসে মাত্র ৬ রানের লিড পেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে বরিশালের ব্যাটিং ধস রংপুরকে এনে দিয়েছে দারুণ অবস্থান। বরিশাল দিন শেষ করেছে মাত্র ৯০/৭ স্কোরে।
জাতীয় দলের লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন ৩ উইকেট নিয়ে বরিশালের মিডল অর্ডারের পতন ঘটান। তার তৃতীয় উইকেটটি, মঈন খান-আউট হওয়ার পর বরিশাল দাঁড়িয়েছিল ৫৪/৬ অবস্থায়। তাসামুল হক (২২*) কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও বড় বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়নি।
এর আগে রংপুর ২০২ রানে অলআউট হয়। সর্বোচ্চ ৩৭ রান করে নাসির হোসেন ও মিম মোসাদ্দেক দলকে টেনে নেন। এই ইনিংসেই বরিশালের দুই পেসার ইয়াসিন আরাফাত ও রুয়েল মিয়া এবং স্পিনার তানভীর ইসলাম পেয়েছেন ৩টি করে উইকেট। নাঈম ইসলামকে ক্যাচ বানিয়ে দ্বিতীয় উইকেট নেওয়ার মাধ্যমে রুয়েল মিয়া স্পর্শ করেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০০ উইকেটের মাইলফলক।
স্পিন যুগল শুভাগত-আরিফের দাপট
চট্টগ্রামে নবাগত ময়মনসিংহ বিভাগ এগিয়ে থেকে দিন শেষ করেছে দ্বিতীয় দিনে। ৮ উইকেটে ২৭১ থেকে অলআউট ২৮৮ করলেও পরে বল হাতে দাপট দেখিয়ে চট্টগ্রামকে অলআউট করে ২১০ রানে। চট্টগ্রামের অধিনায়ক শাহাদাত হোসেন করেন সর্বোচ্চ ৬৫ রান।
ময়মনসিংহের বোলিংয়ে জ্বলে ওঠেন দুই স্পিনার শুভাগত হোম ও আরিফ আহমেদ দুজনই নেন ৪টি করে উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ময়মনসিংহ ৮২/২ নিয়ে দিন শেষ করায় তাদের লিড দাঁড়িয়েছে ১৬০ রানে।
একদিন দেরিতে শুরু, নিয়ন্ত্রণে সিলেট
সিলেটে ম্যাচ শুরু হয়েছে এক দিন পিছিয়ে। সেদিনেই খুলনা প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ২৫৯ রানে। এনামুল হক ও সৌম্য সরকার দ্রুত জুটি গড়লেও ৫ বলের ব্যবধানে দুজনই আউট হয়ে বিপদে পড়ে দল। সৌম্যকে (২৭) এলবিডব্লু করেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ, আর এনামুলকে (২৪) ক্যাচ বানান তানজিম হাসান সাকিব।
খুলনার পক্ষে অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন করেন সর্বোচ্চ ৪৪, কালাম সিদ্দিকী ৩৬। দুজনকেই ফেরান নাসুম, যিনি ৬১ রানে নেন ৪ উইকেট। সিলেট বিনা উইকেটে ২৮ রান তুলে দিন শেষ করেছে, যা তাদের জন্য আশাব্যঞ্জক শুরু।










Discussion about this post