বিশ্বকাপ শেষে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। ভারতে দীর্ঘ সফর শেষে আজ বিকেলে ঢাকায় পা রাখেন নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। বিমানবন্দরে পৌঁছেই সামনে আসে পরিচিত প্রশ্ন-বিসিবি সভাপতির সেই মন্তব্য, ছেলেদের আগেই মেয়েরা বিশ্বকাপ জিতবে!
গত শনিবার গুলশান ইয়ুথ ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বিসিবি সভাপতি এমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। জ্যোতি অবশ্য সেই বিশ্বাসকে প্রেরণাই মনে করছেন। বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘ভালো লেগেছে যে তিনি এটা বিশ্বাস করেন। তিনি শুধু এখন নয়, বছরের পর বছর ধরে আমাদের খেলা দেখেন। কাছ থেকে জানেন। তাই এমন মন্তব্য করেছেন, এটা আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা।’
তবে বিশ্বকাপটা শেষ হয়েছে কিছু আক্ষেপ নিয়ে। আট দলের টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ সপ্তম হয়ে বিদায় নিয়েছে। সাত ম্যাচে এক জয়ে শেষ করতে হয়েছে জ্যোতিদের। পাঁচ ম্যাচে হার, একটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত। এর মধ্যেও ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার সুযোগ ছিল। সেগুলো হাতছাড়া হওয়ার কষ্ট গলাতেই আটকে ছিল জ্যোতির কণ্ঠে, ‘আমাদের এক-দুইটা না, অনেকগুলো ম্যাচ জয়ের সুযোগ ছিল। কিন্তু কাজে লাগাতে পারিনি। দল হিসেবে এটা ব্যর্থতা বলতে হবে। দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচে তো একাধিক ক্যাচ মিস করেছি—ওগুলোই খেসারত দিতে হয়েছে।’
বিশ্বকাপের আগেই বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ম্যাচ-অভিজ্ঞতার অভাব। সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ নারী দল এপ্রিল মাসে, ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে লাহোরে। এরপর সাড়ে পাঁচ মাস কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ নেই। জ্যোতির মতে, এই বিরতিই বড় ঘাটতি হয়ে দাঁড়িয়েছে, ‘প্রস্তুতি ছিল, কিন্তু আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেলার একটা প্রভাব পড়েছে। বড় টুর্নামেন্টে কঠিন পরিস্থিতি সামলানোর অভিজ্ঞতা আমাদের কম। সেটাই পারফরম্যান্সে বোঝা গেছে।’
ব্যাটিং-ফিল্ডিংয়ের ব্যর্থতা বড় হয়ে ধরা দিয়েছে পুরো টুর্নামেন্টে। বোলিংয়ে কিছুটা আলো থাকলেও -০.৫৭৮ নেট রানরেটই বলে দেয়, কতটা পিছিয়ে ছিল দল। অধিনায়ক নিজেও ছিলেন অফফর্মে। সাত ম্যাচে করেছেন মাত্র ১৫৭ রান, এক ফিফটি। জ্যোতি নিজের ব্যর্থতাও মেনে নিচ্ছেন অকপটে,
‘আমি স্বীকার করি, আমার ব্যাটিং ঠিক হয়নি। আমি ভালো খেললে হয়তো দল কিছু ম্যাচে জিততে পারত। আমাদের অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা ভালো করলে নতুনদের ওপর চাপ কমতো। কিন্তু সেটা হয়নি।’
তবে সতীর্থদের প্রশংসা করতে ভোলেননি জ্যোতি, ‘সুপ্তা (শারমিন আক্তার) দারুণ ব্যাটিং করেছে, নিয়মিত রান করেছে। সোবহানা আপু ভালো করেছে। স্বর্ণা তো মিডল অর্ডারে নেমে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়েছে।’










Discussion about this post