লিগে জয় দিয়েই এবার পথচলা শুরু হয়েছিল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের। তারপর টানা দুই ম্যাচে হার। কিন্তু সময়মতো ঠিকই নিজেদের মেলে ধরল সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের মহা শক্তিধর আবাহনী লিমিটেডকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে লিজেন্ডসরা। নাঈমের শতরানে বৃহস্পতিবার ধানমন্ডির ক্লাবটিকে ১৪ রানে হারিয়েছে রূপগঞ্জের ক্রিকেটাররা।
সাভারের বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে টস ভাগ্য ছিল অবশ্য আবাহনীর। যদিও টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ লড়েছে রূপগঞ্জ। তারা ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে দল তুলে ২৯৭ রান। আগের তিন ইনিংসে নার্ভাস নাইটিজে ফেরা নাঈম ইসলাম এবার করেন শতরান। জবাব দিতে নেমে ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে আবাহনী করে ২৮৩ রান। মাশরাফি নেন ৩ উইকেট।
স্বপ্নের মতো সময় কাটাচ্ছেন তিনি। তবে আক্ষেপ-এই শব্দটাই গত কিছুদিন ধরে জড়িয়ে ছিল তার নামের সঙ্গে। থাকবেই না কেন? একটুর জন্য যে তিনটি শতরান হাতছাড়া। নার্ভাস নাইনটিজে এসে পথ হারান। ৯১, ৯৫ তারপর ৯২ রান। এভাবেই হতাশা সঙ্গী হয়েছে নাঈম ইসলামের। এবার চতুর্থ দফায় এসে সফল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের এই তারকা ক্রিকেটার। শতরানে উড়লেন তিনি।
চলতি লিগে নিজেদের প্রথম ৩ ম্যাচেই ফিফটি করেন নাঈম ইসলাম। বৃহস্পতিবার চতুর্থ ম্যাচ খেলতে নেমে সেঞ্চুরি করলেন তিনি। বিকেএসপিতে আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে নাঈম পেলেন তিন অঙ্কের ম্যাজিকেল স্কোরের আনন্দে ভাসেন।
বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে প্রতিপক্ষের আরাফাত সানির করা ইনিংসের ৪৩তম ওভারের প্রথম বলে লং অফে বল পাঠিয়ে নাঈম পৌঁছে যান তিন অঙ্কের ম্যাজিকেল ফিগারে। ৯৯ বলে পাওয়া সেঞ্চুরির ইনিংসে চার ছিল ১০টি ও ছক্কা ৩টি। এটি লিস্ট এ ক্যারিয়ারে তার ১১ নম্বর সেঞ্চুরি।
নাঈম এদিন ৪ চার ও ১ ছয়ে ফিফটি করেন ৭১ বল খেলে। পরের পঞ্চাশ রান ৬ চার ও ২ ছয়ে মাত্র ২৮ বলে। ৪৫তম ওভারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে নাঈম আউট হন ১২৪ রানে। ১০৯ বলের ইনিংসে ছিল ১৪টি চার আর ৪টি ছয়। এছাড়া রূপগঞ্জের হয়ে দলের ভারতীয় ক্রিকেটার চিরাগ জানি করেন ৭৩ বলে ৪৯ রান। রকিবুল হাসান ২২, সাব্বির রহমান ২১ বলে ৩০, তানভীর হায়দার ১২ বলে ২৩ ও মাশরাফি বিন মর্তুজা করেন ১৭ রান। আবাহনীর মোসাদ্দেক হোসেন নেন দুটি উইকেট।
এরপর জবাব দিতে নামা আবাহনীকে সব সময়ই চোখে চোখে রেখেছে রূপগঞ্জ। বোলাররা রান রেটের লাগামটাও ধরে রেখেছেন। এরমধ্যে অবশ্য ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন তৌহিদ হৃদয়। ৭৪ রান করা এই তরুণকে ফেরান মাশরাফি। অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেনও লড়ছিলেন। কিন্তু তাকেও তুলে নেন সেই মাশরাফি। মোসাদ্দেক ৬৬ রানে বিদায় নিতেই নিশ্চিত হয় লিজেন্ডসদের জয়। শেষ দিকে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন অবশ্য ২৯ বলে ৪৩ রানের ঝড় তুলে কমান হারের ব্যবধান।
দলকে জয় এনে দিয়ে মাশরাফি ৬৩ রানে নেন ৩ উইকেট। একটি করে উইকেট নেন নাবিল সামাদ, শফিউল ইসলাম, নাঈম ইসলাম, সনজিত সাহা ও চিরাগ জানি। গোটা দল জেগে এভাবে জেগে উঠেছে বলেই লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ উড়িয়ে দিয়েছে আবাহনীকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ৫০ ওভারে ২৯৭/৬ (তানজিদ ১৫, আলভী ৫, চিরাগ ৪৯, নাঈম ১২৪, রকিবুল ২২, সাব্বির ৩০, তানবীর ২৩*, মাশরাফি ১৭*; সাইফ ১০-০-৫১-১, মোসাদ্দেক ১০-০-৫৮-২, সানি ৮-১-৫০-১, কামরুল ৭-১-৫৭-১, তানভীর ১০-০-৫১-১, বিহারি ৫-০-২৫-০)
আবাহনী লিমিটেড: ৫০ ওভারে ২৮৩/৮ (মুনিম ২৬, নাঈম ৩৫, বিহারি ১৮, হৃদয় ৭৪, মোসাদ্দেক ৬৬, শামীম ২, জাকের ৪, সাইফ ৪৩*, কামরুল ৬; মাশরাফি ৯-০-৬৩-৩, নাবিল ১০-০-৪৮-১, শফিউল ৮-০-৫১-১, নাঈম ৬-০-৩৩-১, সঞ্জিত ৮-০-৪১-১, চিরাগ ৯-০-৪২-১)
ফল: লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ১৪ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: নাঈম ইসলাম
Discussion about this post