ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের চেয়ে আফগানিস্তান শুরু র্যাংকিংয়েই নয় মাঠের ক্রিকেটেও এগিয়ে তা আবারও প্রমাণ হল রবিবার। এদিন মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে প্রতিপক্ষের স্পিনে রীতিমতো উঠে গেছে টিম টাইগার্স।
রবিবার ঘরের মাঠে ম্যাচের প্রথম ৬ ওভারেই যা একটু উজ্জীবিত পারফরম্যান্স দেখায় বাংলাদেশ। বাকি সময়টায় আর পাত্তাই পায়নি স্বাগতিকরা। মোহাম্মদ নবির দুর্দান্ত ইনিংস আর মুজিব-উর-রহমানের দারুণ বোলিংয়ে আফগানরা পেয়ে যায় ২৫ রানের সহজ জয়।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে যদিও রবিবার টস হেরে বাংলাদেশের বোলিংয়ের শুরুটা দারুণ হয়েছিল। কিন্তু মোহাম্মদ নবির ৫৪ বলে ৮৪ রানের অপরাজিত ইনিংসের কারণে সেটা পরে ধরে রাখতে পারেনি টিম টাইগার্স। সে সুযোগে সফরকারীরা শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে তোলে ২০ ওভারে ১৬৪ রান। রান তাড়ায় বাংলাদেশ কখনোই সেভাবে জাগাতে পারেনি জয়ের সম্ভাবনা। শেষ ওভারে অলআউট হয় ১৩৯ রানে। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে মুজিব নিয়েছেন ১৫ রানে ৪ উইকেট। আফগানিস্তানের নবি মেরেছেন ৭ ছক্কা। বাংলাদেশের ইনিংসে একমাত্র ছক্কা শেষ ব্যাটসম্যান মুস্তাফিজের!
বাংলাদেশের রান তাড়ার শুরু ছিল চমক দিয়ে। লিটন দাসের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন মুশফিকুর রহিম! কিন্তু পারফরম্যান্সে কোনো চমক দেখা যায়নি। বাজে শটে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই মুজিবকে উইকেট উপহার দেন লিটন দাস। পরে পেসার ফরিদকে স্টাম্প উন্মুক্ত করে স্কুপ করতে চাইলেন দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে। বল উড়িয়ে দিল বেলস। তবে রশিদ খানের সঙ্গে খানিকটা কথার লড়াইয়ের পর সাকিব ফিরলেন মুজিবের বলে উইকেট বিলিয়ে। ওই ওভারেই সৌম্য সরকার আউট নিজের প্রথম বলে। ৫ ওভার শেষে রান ৪ উইকেটে ৩২, বাংলাদেশের আশা শেষ অনেকটাই।
দ্রুত ৪ উইকেট হারানোর পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও সাব্বির রহমান চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাদের ৫৮ রানের জুটি গড়তে লেগে যায় ৫১ বল। এরপর যখনই প্রতিপক্ষের বোলারদের উপর তারা চড়াও হতে গেলেন তখনই বাংলাদেশ পড়ে গেল বিপদে। মানে মাহমুদউল্লাহ ও সাব্বির ফেরেন মুজিবের স্পিন বিষে নীল হয়ে। ফেরার আগে মাহমুদউল্লাহ করেন ৩৯ বলে ৪৪ রান। আর সাব্বির খেলেন ২৭ বলে ২৪ রানের ইনিংস। আগের ম্যাচের নায়ক আফিফ হোসেন ১৪ বলে করেছেন ১৬। শেষ ব্যাটসম্যান মুস্তাফিজ ৭ বলে ১৫। তাতে পরাজয়ের ব্যবধান কিছুটা কমে।
এর আগে শুরুতেই বল হাতে ঝড় তুললেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তবে শেষটাতে দাপট থাকল মোহাম্মদ নবির। ত্রিদেশীয় টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট সিরিজে তারপরও চ্যালেঞ্জিং স্কোরই দাঁড় করিয়েছে আফগানিস্তান। রোববার মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে তারা তুলেছে ১৬৪ রান।
অবশ্য প্রথম দশ ওভারে ৪ উইকেট তারা করে ৬০ রান। কিন্তু পরের ৫ ওভারে ৪৯ রান তুলেন আসগর আফগান ও মোহাম্মদ নবি। তার আগে প্রথম ওভারেই প্রথম বলেই পেয়ে যায় উইকেট। মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন ফেরান রহমানউল্লাহ গুরবাজকে।
নিজের প্রথম ওভারে উইকেট পেয়েছেন সাকিব আল হাসানও। হজরতউল্লাহ জাজাইকে আউট করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। নাজিব তারকাকে ফেরান সাইফউদ্দিন। তার ব্যাটে ১৩ বলে ২১। তারপর জিম্বাবুয়ে ম্যাচের নায়ক নাজিবুল্লাহ জাদরানকে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন সাকিব।
কিন্তু আসগর আফগান ও নবি গড়েন ৬৭ বলে ৭৯ রানের জুটি। ৩৬ বলে দুই ছক্কা ও তিন চারে ৪০ রান করেন আসগর। নবি ৫৪ বলে ৮৫ রানে অপরাজিত থাকেন। সাইফউদ্দিন তার টি-টুয়েন্টিতে ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করেন। ৪ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। ৪ ওভারে ১৮ রানে ২ উইকেট নেন সাকিব।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৬৪/৬ ( রহমানউল্লাহ ০, জাজাই ১, তারাকাই ১১, আসগর ৪০, নাজিবউল্লাহ ৫, নবি ৮৪*, নাইব ০, করিম ৫*; সাইফ ৪-০-৩৩-৪, সাকিব ৪-১-১৮-২, মুস্তাফিজ ৪-০-২৫-০, তাইজুল ৪-০-৩২-০, সৌম্য ২-০-৩১-০, মোসাদ্দেক ১-০-১২-০, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৩-০)।
বাংলাদেশ: ১৯.৫ ওভারে ১৩৯ (লিটন ০, মুশফিক ৫, সাকিব ১৫, মাহমুদউল্লাহ ৪৪, সৌম্য ০, সাব্বির ২৪, আফিফ ১৬, মোসাদ্দেক ১২, সাইফ ২, তাইজুল ০*, মুস্তাফিজ ১৫; মুজিব ৪-০-১৫-৪, ফরিদ ২.৫-০-৩৩-২, করিম ৩-০-২৭-০, নবি ২-০-১১-০, রশিদ ৪-০-২৩-২, নাইব ৪-০-২৭-২)।
ফল: আফগানিস্তান ২৫ রানে জয়ী
ম্যাচ সেরা: মোহাম্মদ নবি
Discussion about this post