স্বপ্নের মতো অভিষেক। যাকে বলে আসলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন!
জাকির হাসানের গল্পটা এমনই। অভিষেক টেস্ট খেলতে নেমেই উঠে গেলেন অনন্য উচ্চতায়। তুলে নিলেন শতরান। ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে দাপট দেখিয়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে চাপের মুখে মাথা উঁচু করে লড়াই করলেন। তুলে নিলেন সেঞ্চুরি। খেললেন ২১৯ বল।
চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিন অক্ষর প্যাটেলের বলে সুইপে চার মেরে তিন অঙ্কের ম্যাজিকেল ফিগারে পা রাখেন জাকির। বাংলাদেশের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন তিনি। বাংলাদেশের অভিষেকে প্রথম এই কীর্তি গড়েছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। এটি অনন্য। বুলবুল দেশের অভিষেক টেস্টে করেছিলেন শতক।
এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে উঠেন অনন্য উচ্চতায় মোহাম্মদ আশরাফুল। তারপর ১০ নম্বরে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন অভিষিক্ত আবুল হাসান। এবার চতুর্থ ইনিংসে মাত্র দ্বিতীয় ওপেনার হিসেবে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়লেন জাকির। প্রথম করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের লেন বাইচান। ১৯৭৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে লাহোর টেস্টে তিনি অপরাজিত ছিলেন ১০৫ রানে।
সেঞ্চুরির পরই অবশ্য বিদায় নেন জাকির হাসান। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে ধরা পড়লেন স্লিপে। করেন ২২৪ বলে ১৩ ও ১ ছক্কায় ১০০ রান।
টেস্টে অভিষেকে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এখন জাকির হাসানের। বাংলাদেশের হয়ে আগের সেরা ছিল জাভেদ ওমর বেলিম গুল্লুর। ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেকে তিনি অপরাজিত ছিলেন ৮৫ রানে।
জাকির দারুণ খেলেই উঠে আসেন টেস্ট দলে। কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে কক্সবাজারে ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে ১৭৩ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। বেশ শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের সামনে। তৃতীয় ইনিংসে প্রায় সাড়ে ১০ ঘণ্টা ব্যাট করে ৪০২ বল খেলেছেন।
ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত রান করেছেন জাকির। এ বছর জাতীয় লিগে ৫৫.২৫ গড়ে ৪৪২ রান তার, টুর্নামেন্টে যা সর্বোচ্চ। গত বিসিএলে করেন ৯৯ গড়ে ৩৯৬ রান। ৫০ ওভারের সংস্করণের গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ৪২.৪০ গড় ও ৯২.০৪ স্ট্রাইক রেটে করেন ৬৩৬ রান!
এবার আরও উচ্চতায়। ১৪৫ বছরের টেস্ট ইতিহাসে অভিষেকে চতুর্থ ইনিংসে সেঞ্চুরি করা মাত্র দ্বিতীয় ওপেনার! মনে রাখার মতো এক অভিষেক!
Discussion about this post