ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
ট্রফি ছুঁতে জিততেই হবে। এমন ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন মোহাম্মদ নাঈম। ওপেনিংয়ে তাকে দারুণ সঙ্গ দেয়া সাইফ হাসান এক পর্যায়ে খোলস ছেড়ে বের হন। তুলে নেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। এরপর তিনি বল হাতেও রাখেন অবদান। শেষ পর্যন্ত তার অলরাউন্ডন নৈপুণ্যে শ্রীলঙ্কাকে ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ৯৮ রানে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ ‘এ’ দল।
কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শনিবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সাইফের (১১৭) সেঞ্চুরি ও মোহাম্মদ নাঈমের ঝড়ে (৬৬) বাংলাদেশ করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩২২ রান। পরে বল হাতে শুরু থেকেই লঙ্কানদের টেনে ধরেন আবু হায়দার রনি ও আফিফ হোসেনরা। শেষ পর্যন্ত স্বাগতিকদের ২৪.৪ ওভারে শ্রীলঙ্কা ৬ উইকেটে ১৩০ রানে আঁটকে রাখে সফরকারীরা। এরপর আলোকস্বল্পতায় আর খেলা সম্ভব হয়নি। সে সময় ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে জয়ের জন্য স্বাগতিকদের দরকার ছিল ২২৯ রান।
শনিবার সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে সাইফ ও মোহাম্মদ নাঈম শেখের ব্যাটে শুরুটা ভালো করে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে ঝড় তোলা নাঈম এবারও শুরু থেকে চড়াও হন বোলারদের ওপর। শেষ পর্যন্ত তিনি ফিরে যান ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ এর দায়ে। তার আগে ৭৬ বলে দুই ছক্কা ও ৫ চারে ৬৬ রান করেন তিনি। তার বিদায়ে ভাঙে সাইফের সঙ্গে ১২০ রানের জুটি।
নাঈমের দেখানো পথে শনিবার হাঁটতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত ও এনামুল হক। তবে চতুর্থ উইকেটে সাইফকে সঙ্গ দেন মোহাম্মদ মিথুন। ৯৯ রানের জুটিতে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পর বেশি দূর যেতে পারেননি সাইফ। ১১০ বলে ১২ চার ও তিন ছক্কায় ফিরেন ১১৭ রান করে। শেষ পর্যন্ত এক ছয় ও ৩ চারে ৩৫ বলে ৩২ রানে থামেন অধিনায়ক মিথুন। এরপর আর তেমন কোনো জুটি গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। তারপরও সবার ছোট-ছোট অবদানে তিনশ ছাড়ায় বাংলাদেশের সংগ্রহ।
শ্রীলঙ্কার শিরান ফার্নান্দো ৪ উইকেট নেন ৫০ রানে। বিশ্ব ফার্নান্দো ৬৯ রানে তিনটি।
বড় পুঁজি পেয়ে শুরু থেকেই শনিবার শ্রীলঙ্কাকে চেপে ধরে বাংলাদেশ। পাথুম নিসানকাকে দ্বিতীয় ওভারে ফিরিয়ে দেন আফিফ। আরেক ওপেনার সান্দুন বিরাক্কডিকে বোল্ড করে বিদায় করেন বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার। তৃতীয় উইকেটে কামিন্দু মেন্ডিস ও আশান প্রিয়াঞ্জনের ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে শ্রীলঙ্কা। চারটি চারে ৩৪ রান করা প্রিয়াঞ্জনকে থামিয়ে ৬৪ রানের জুটি ভাঙেন সাইফ। পরে তুলে নেন প্রিয়মল পেরেরার উইকেট।
এদিকে আশেন বান্দারাকে ফিরিয়ে শিকার শুরু করা ইবাদত হোসেন পরের ওভারে বিদায় করেন ভোগানো কামিন্দু মেন্ডিসকে। ফেরার আগে কামিন্দু তিন ছয় ও দুই চারে ৬৫ বলে করেন ৫৫। এর পরপরেই আলোকস্বল্পতায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়।
সাইফ ও ইবাদত নেন দুটি করে উইকেট। বল-ব্যাট হাতে দারুণ অবদান রাখায় ম্যাচ সেরা হয়েছেন সাইফ
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ‘এ’ দল: ৫০ ওভারে ৩২২/৯ (সাইফ ১১৭, নাঈম ৬৬, শান্ত ২, এনামুল ১৫, মিথুন ৩২, আফিফ ১২, সোহান ১৭, আরিফুল ৬, আবু হায়দার ৮, সানজামুল ১২*, ইবাদত ৩*; বিশ্ব ১০-০-৬৯-৩, শিরান ১০-০-৫০-৪, মেন্ডিস ৭-০-৪৪-০, করুনারত্নে ৮-০-৬১-০, প্রিয়াঞ্জন ৬-০-২৯-০, আপন্সো ৯-০-৬১-১)
শ্রীলঙ্কা: (লক্ষ্য ২৪.৪ ওভারে ২২৯) ২৪.৪ ওভারে ১৩০/৬ (নিসানকা ৬, বিরাক্কডি ১৮, কামিন্দু ৫৫, প্রিয়াঞ্জন ৩৪, পেরেরা ৭, বান্দারা ৬, করুনারত্নে ১*, রমেশ ১*; আবু হায়দার ৫-০-২৮-১, আফিফ ৬-০-৩৬-১, ইবাদত ৪.৪-০-২৬-২, সাইফ ৬-০-২৫-২, সানজামুল ৩-০-১৫-০)
ফল: ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ৯৮ রানে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয়ী বাংলাদেশ
Discussion about this post