সব কিছু ঠিকঠাক। শুধু পাকিস্তান দলের ঢাকায় আসার অপেক্ষা। কিন্তু সেটি আর হচ্ছে কই? শেষ মুহূর্তে জানা গেল-তারা আর আসছে না। সাফ ফুটবলের লক্ষ্যে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার জন্য দুপুরে আসার কথা ছিল পাকিস্তান ফুটবল দলের। সফর বাতিল হওয়াতে ১৩ ও ১৬ আগস্ট ম্যাচ দুটি এখন বাতিলের খাতায়।
শেষ সময়ে পাকিস্তানের বাংলাদেশ সফর বাতিলের পেছনে লিখিতভাবে একটি কারণ আপাতত খুঁজে পাওয়া গেছে। সেটি হচ্ছে-রাজনৈতিক অস্থিরতা। ১৩ ১৪ আগস্ট হরতালের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। সম্ভবত ‘নিরাপত্তা’র বিষয়টি বিবেচনা করে ফুটবল দলটি ঢাকায় আসার সিদ্ধান্তটি বাতিল করে দিয়েছে। আর অলিখিত কারণ হিসেবে অনেক কিছুই সামনে আসছে। নিরাপত্তার কারণেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দল তাদের দেশে যায়নি। এছাড়া রাজনৈতিক আরও দুয়েকটি বিষয়ও হয়তো তাদের কাছে বড় হিসেবে এসেছে। তবে একদম শেষ মুহূর্তে না করে দেওয়ায় অনেককেই অবাক করে দিচ্ছে।
সাফ ফুটবলের লক্ষ্যে দুটি ম্যাচ খেলার জন্য কিন্তু পাকিস্তান দল ভিসাও নিয়ে ফেলেছিল। লাহোর থেকে করাচি, তারপর ঢাকা সফর ছিল তাদের সূচিতে। সেভাবে চার প্রবাসী ফুটবলারকে নিয়ে আজ দুপুরে আসার কথা। সব কিছু উল্টে গেল। শনিবার রাতে বাফুফেতে চিঠি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে না আসার খবরটি নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রশ্ন উঠেছে-রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশে আসছে না পাকিস্তান। যদি তাই হয়, তাহলে আফগানিস্তানে যাচ্ছে কী করে তারা। ২০ আগস্ট সেখানে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা আছে। কাবুলসহ পুরো দেশেই তো যখন-তখন বোমা বিস্ফোরণ হচ্ছে। আর তালেবানদের হুমকি তো আছেই।
রাজনৈতিক অস্থিরতা সম্পর্কে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ বলেছেন, ‘আমরা পাকিস্তান দলের জন্য সবরকমের প্রস্তুতি নিয়েই রেখেছিলাম। নিরাপত্তা থেকে হোটেল, অনুশীলন সুবিধাসহ। এখন তারা বলছে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ঢাকায় আসতে পারছে না। আমরা বুঝতে পারছি না, বিষয়টি কী থেকে কী হয়ে গেল।’
সাফ ফুটবলের আগে প্রস্তুতি ম্যাচের জন্য বাংলাদেশ দলের কাছে পাকিস্তানই ছিল ভরসা। এখন সেটিও ভেস্তে গেল। বিকল্প ভাবছে বাফুফে। সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন কাল দুপুরে বলেছেন, ‘অনিবার্য কারণবশত পাকিস্তান দল ঢাকা সফর বাতিল করেছে। আমিও কিছুক্ষণ আগে শুনেছি। এখন বিকল্প খুঁজতে হবে। দেখা যাক কী হয়। তবে আমিও চাই জাতীয় দল আরও প্রস্তুতি ম্যাচ খেলুক। তাহলে দলেরই লাভ হবে।’
সাফের আগে অন্য কোথায় গিয়ে ম্যাচ খেলাও কঠিন। হাতে সময়ও কম। তাই এই মুহূর্তে ভরসা বলতে এদিক-সেদিক থেকে খেলোয়াড় এনে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়ে দেওয়া। তাতে স্থানীয়দের পাশে আফ্রিকানরাও থাকছে। আগামীকাল প্রথম ম্যাচ হিসেবে তাদেরই দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। যদিও ঈদের ছুটিতে খেলোয়াড়দের পেতেই গলদঘর্ম হতে হচ্ছে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর জোবায়ের নিপুকে।
জাতীয় দলের ডাচ কোচ লোডউইক ডি ক্রুইফ আগেই অবশ্য পাকিস্তানকে এড়াতে চাইছিলেন। সাফে একই গ্র“পে থাকায় তার এ কৌশল ছিল। কিন্তু ততক্ষণে সফর নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় তখন কিছু করা সম্ভব হয়নি। নেদারল্যান্ডসে বসে হয়তো একঅর্থে খুশি হবেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে লড়তে হবে না। তবে বিকল্প নিয়ে তার সহকারী রেনে কস্টার পুরোপুরি সিরিয়াস। কাল অনুশীলন শেষে বলেছেন, ‘পাকিস্তান আসবে না শুনেছি। তাহলে এখন বিকল্প কোন দল। আমরা তো প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। এখন পর্যন্ত কোনো জাতীয় দল পেলাম না। থাইল্যান্ড গিয়েছি। সেখানে গিয়ে ক্লাব আর বয়সভিত্তিক দলের বিপক্ষে খেলে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। জাতীয় দলের বিপক্ষে খেলা হচ্ছে কই? জাতীয় দল না পেলে তো ম্যাচে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকছে না। এখন তোমাদের ফেডারেশন কী করে, সেটাই দেখার।’
Discussion about this post