১০০ মিটারে সর্বকালের দ্বিতীয় দ্রুতমানব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টাইসন গে। মস্কোতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে জ্যামাইকান গতির রাজা উসাইন বোল্টকে চ্যালেঞ্জ জানানোর অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। কিন্তু সেটা আর হচ্ছে না। গে যে এখন ডোপপাপী। ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ হওয়ায় ট্র্যাক থেকে আপাতত সরে দাঁড়াতে হচ্ছে দু’বারের সাবেক এ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে। টাইসন গে একা নন, নিষিদ্ধ ডোপ টেস্টে উত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হয়েছেন সাবেক বিশ্ব রেকর্ডের অধিকারী জ্যামাইকান স্প্রিন্টার আসাফা পাওয়েল এবং স্বদেশি শেরন সিম্পসনও। যদিও মস্কোর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে জ্যামাইকান দলে জায়গা হয়নি আসাফা পাওয়েলের। অবশ্য কারোরই ‘বি’ নমুনা এখনও পরীক্ষা করা হয়নি।
গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ট্রায়ালের সময় টাইসন গে’র রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের এন্টি ড্রাগের একটি এজেন্সি তার রক্তে নিষিদ্ধ শক্তিবর্ধক ড্রাগ পাওয়ার খবরটা জানায়। গে ব্যাপারটা স্বীকারও করেছেন। তবে সঙ্গে এটাও বলেছেন, তিনি ইচ্ছে করে এটা নেননি। রোববার ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ হওয়ার কথা স্বীকার করে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপস থেকে সরে দাঁড়ানোরও কথা জানিয়ে দিয়েছেন আগেভাগে। ২০০৭ সালের এ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জানান, ‘আসলে আমি কাউকে বিশ্বাস করেছিলাম এবং সে-ই আমাকে ডুবিয়েছে। এ নিয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না। তবে এটাও ঠিক, বিবাদের কোনো ঘটনা আমার নেই। কিন্তু আশা করছি আমি ফের ট্রাকে নামতে পারব। কিন্তু এই মুহূর্তে যে শাস্তিই আসুক সেটা মাথা পেতে নেব আমি।’
এ বছর দারুণ সময় কাটাচ্ছিলেন টাইসন গে। আমেরিকান ট্রায়ালের ১০০ মিটারে বছরের সেরা টাইমিং গড়েন তিনি। ৯.৭৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে বোল্টকে সতর্কবার্তা পাঠিয়ে দেন গে। এ বছর বোল্টের সেরা টাইমিং ৯.৯৪ সেকেন্ড। মনে করা হয়েছিল মস্কোতে দু’জনের লড়াইটা দারুণ জমে উঠবে। বোল্টকে হারানোর অদম্য ইচ্ছে ছিল টাইসন গে’রও। ১০০ মিটারে সেরা টাইমিংয়ের দিক দিয়ে তার আগে আছেন শুধু বোল্টই। জ্যামাইকান এ গতি দানবের সেরা টাইমিং যেখানে ৯.৫৮ সেকেন্ড, গে’র সেখানে ৯.৬৯ সেকেন্ড। এদিকে পাওয়েল ও সিম্পসনের ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ হওয়ার খবরটা জানিয়েছেন তাদের এজেন্ট পল ডোয়েল। তিনি জানান, জুনে জ্যামাইকান চ্যাম্পিয়নশিপসে অংশ নেওয়ার সময় তাদের রক্তে নিষিদ্ধ অক্সিলোফ্রিন নমুনা পাওয়া গেছে। টুইটারে এটা স্বীকারও করেছেন আসাফা পাওয়েল। বলেন, ‘জুন মাসে আমার রক্তের নমুনা নেওয়া হয় এবং ওটাতে নাকি অক্সিলোফ্রিন পাওয়া গেছে। কিন্তু বলতে চাই, আমি কোনো প্রতারণা করিনি। যেটা হয়েছে সেটা অজ্ঞাতসারে। আমি কোনো নিয়ম করিনি।’
২০০৫ থেকে ’০৮ পর্যন্ত ১০০ মিটারে বিশ্ব রেকর্ডের মালিক ছিলেন পাওয়েল। মানে বোল্টের কাছে রেকর্ড হাতছাড়া করার আগে ১০০ মিটারে সেরা ছিলেন তিনিই। ২০০৮ অলিম্পিকে ৪০০ মিটার রিলেতে জ্যামাইকাকে স্বর্ণ জেতাতে দারুণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। অন্যদিকে ২০০৪ সালের অলিম্পিকে মেয়েদের ৪০০ মিটার রিলেতে স্বর্ণজয়ী দলের সদস্য ছিলেন সিম্পসন। ২০০৮ সালের অলিম্পিকের ১০০ মিটারে রৌপ্য জিতেছিলেন সিম্পসন। লন্ডন অলিম্পিকে রৌপ্য জেতাতেও অবদান আছে তার।
Discussion about this post